ঝাড়গ্রামে তৃণমূলের জনসভায় প্রধানমন্ত্রীর “মন কি বাত”কে “ধ্বংস কি বাত” বলে কটাক্ষ পার্থ চ্যাটার্জির

অমরজিৎ দে, ঝাড়গ্রাম, ১৫ ডিসেম্বর: ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের “কৃষি আইন” প্রত্যাহারের দাবিতে শহরের অফিসার্স ক্লাব ময়দানে বিশাল জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হল। প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আজ তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে দলীয় কর্মীদের বলেন, আমরা কি পারি না অত্যাচার বন্দুকের বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে লড়াই করেছিলেন সেই আন্দোলনের শপথ নিয়ে লড়াই করতে, অশুভ শক্তিকে হারাতে পারি তো”। তিনি বলেন, আমরা যখন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। তখন বিজেপি সরকার কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে, মুখের গ্রাস কেড়ে নিচ্ছে, পেটে লাথি মারছে।” এরাজ্যে রাজ্য সরকার সকলের জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান সহ সার্বিক ক্ষেত্রে যে যে উন্নয়ন করেছে তার ক্ষতিয়ান তিনি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ঝাড়গ্রামে জঙ্গলমহলের লড়াইতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত নাগরিকদের সম্মান জানিয়েছেন। তাদের জন্য যখন উন্নয়ন করেছেন তখন বিজেপি সরকার আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিচ্ছে। বলছে জমির অধিকার তোমার নেই। ওটা আমার। কোন বাপের ব্যাটার শক্তি আছে যে আদিবাসীদের জমি কেড়ে নেয়। জল জঙ্গলের অধিকার কেড়ে নেয় দেখতে চাই। প্রধানমন্ত্রীর ওটা মন কি বাত নয় আসলে ওটা ধ্বংস কি বাত। ধ্বংস করে দাও মানুষকে মেরে ফেলে দাও। শ্রমজীবী মানুষকে মার, কৃষককে মার, আদিবাসীদের জমি কেড়ে নাও, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বাধা দাও, রাস্তাঘাট কোরনা, ব্রিজ তৈরি কোরনা, স্কুল কলেজ তৈরি কোরনা,স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নতি কোরনা, এরা অন্ধকারে ছিল এদের আলো তে এনো না।

তিনি বলেন, অন্ধকার থেকে আলোর পথ দেখালেন মমতা।আজ জঙ্গলমহলে মেডিক্যাল কলেজ তৈরি হচ্ছে, ঝাড়গ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয় তৈরি হচ্ছে, ঝাড়গ্রামে শালবনি, লালগড় কলেজ সহ সর্বত্র শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে চালানো হচ্ছে। সাঁওতালি ভাষায় পড়ানো হচ্ছে। দেখো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিঃশব্দে কি করেছেন। বাঁকুড়া
বিশ্ববিদ্যালয়ে সাঁওতালি ভাষায় পঠন পাঠনের ব্যবস্থা হয়েছে। নতুন করে স্কুল গুলোকে বানিয়ে দিয়েছে।২৮২টি সাঁওতালি শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। কি পায়নি জঙ্গলমহল। যা প্রতিশ্রুতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছিলেন তাই করেছেন। বলেছিলেন তোমদের মূল স্রোতে নিয়ে আসব। তোমরা অস্ত্র ধরোনা। তিনি মূল স্রোতে নিয়ে এসে সকলকে চাকরির ব্যবস্থা করেছেন। কাউকে হোম গার্ডে, কাউকে পুলিশ, কাউকে অন্যত্র ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমরা যখন উন্নয়নের জয়গান গাইছি, আমরা যখন জীবনের জয়গান গাইছি, ওরা তখন এসে বলছে এ গান গাইতে দেব না। নতুন করে আঘাত আনছে। নতুন করে জঙ্গলমহল অশান্ত করার চেষ্টা করছে।

পার্থ চ্যাটার্জি বলেন, তাদের কর্মসূচি একটাই ভাইয়ে ভাইয়ে বোনে বোনে বিবাদ তৈরি করা। ভাইয়ে ভাইয়ে বোনে বোনে রক্তের হোলি খেল। তোমার রক্ত আমার জয়। তোমার দুঃখ আমার সুখ। এই ভাবে এ রাজ্যে বিজেপি চেষ্টা করছে সামাজকে দ্বিখন্ডিত করবার।আদিবাসীদের দুঃখে পরিণত করার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ২৬ দিনের জমি রক্ষার লড়াইকে, পনেরো দিনের ধর্নাকে আজ ছুড়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে তারা।কৃষকদের অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আলু, পেঁয়াজ, ভোজ্য তেল, শস্য সব সরকারের হাত থেকে চলে যাবে। ফঁড়েরা দাম ঠিক করবে। কৃষান মান্ডি বা বাজারে বিক্রি করতে পারবেন না। সহায়ক মূল্যও পাবে না।”

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here