আমাদের ভারত, ১৩ সেপ্টেম্বর: আইআইটি-তে ভর্তির প্রবেশিকা পরীক্ষায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্বাঞ্চলের হতাশাব্যঞ্জক ফল শিক্ষাবিদ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এই পরিস্থিতির বিভিন্ন কারণ ব্যখ্যা করেছেন প্রবীন প্রযুক্তি-পরামর্শদাতা নিখিল রঞ্জন ব্যানার্জি। তাঁর মতে, “প্রশ্নপত্রের ধরণ এবং ছাত্রদের প্রেরণার অভাব, সর্বোপরি আত্মবিশ্বাসের অভাব বা অপ্রতুলতা।“
নিখিলবাবু ’অল ইন্ডিয়া কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল এডুকেশন’-এর (এআইসিটি) পরিচালনমন্ডলীর সর্বভারতীয় সদস্য ও সংগঠনের পরিচালন কমিটির সদস্য, শিলংয়ের নর্থ ইস্ট হিল বিশ্ববিদ্যালয়, শিলচরের অসম বিশ্ববিদ্যালয় এবং দিল্লি
বিশ্ববিদ্যালয়— এই তিন কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের রাষ্ট্রপতির (ভিজিটর) মনোনীত প্রতিনিধি, শিবপুরের ‘বেসু’-র প্রাক্তন উপাচার্য, ওয়েবেল-এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ন্যাশনাল বোর্ড অফ অ্যাক্রিডিটেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল ফর টেকনিক্যাল এডুকেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান।
এই প্রতিবেদককে তিনি জানান, “আমাদের ছাত্রদের আইআইটি-র জয়েন্ট এন্ট্রান্সে (জেইই) বসার আগ্রহ কম। যার অন্যতম কারণ হল আমাদের রাজ্যে জেইই ও উচ্চ মাধ্যমিকের সূচি সিবিএসই-র সিলেবাস থেকে আলাদা। আমাদের প্রশ্নপত্রের ধরণ এবং ছাত্রদের প্রেরণার অভাব, সর্বোপরি আত্মবিশ্বাসের অভাব বা অপ্রতুলতা।
আমাদের ছাত্রদের ভিতর যে কোনও সর্বভারতীয় পরীক্ষার ব্যাপারে একটা ভীতি বিদ্যমান। এগুলো দূর করার দায়িত্ব বাবা-মা এবং শিক্ষকদের। এটা একটা যৌথ দায়িত্ব। যে সব রাজ্যের পরীক্ষার্থীরা উৎকর্ষতা বা সংখ্যার দিক থেকে ভালো ফল করছে, সে সব রাজ্যে সরকারের যথেষ্ঠ অবদান আছে। আমরা বিদ্যালয়শিক্ষা, বিশেষ করে বিজ্ঞানশিক্ষার পরিকাঠামো, গবেষণাগার তৈরিতে যথেষ্ঠ অর্থ সংস্থান করছি না। সেই সঙ্গে আছে শিক্ষকের অপ্রতুলতা।
এই সীমাবদ্ধতার মধ্যেও জয়েন্ট এন্ট্রান্সে আইআইটি-র খড়্গপুর জোনে প্রথম ১০ জনের মধ্যে একজন এবং ১০০ জনের মধ্যে ৬ জন আছেন। তাঁদের ও অন্যান্য সফল প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলব, আত্মানুসন্ধানের প্রয়োজন আছে। মনে রাখতে হবে একই বছরে উচ্চ মাধ্যমিক, রাজ্য জেইই এবং আইআইটি জেই-তে বসার চাপ নেহাত কম নয়।
মেয়েদের সাফল্যের হার বাড়ানোর জন্য ‘সুপারনিউমারি’ আসনের ব্যবস্থা আছে। অর্থাৎ, বাড়তি ছাত্রীকে ভর্তির ব্যবস্থা করার অবকাশ আছে।
১৯৫০/৫১ সালে আমাদের রাজ্য থেকেই ভারতকে প্রথম মহিলা প্রযুক্তিবিদ উপহার দিয়েছিল শিবপুর বিই কলেজ। তবে এখনও বিজ্ঞানশিক্ষার প্রতি মেয়েদের যতটা আগ্রহ পরিলক্ষিত হয় ততটা প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি দেখা যায় না।”