জে মাহাতো, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ২৫ জানুয়ারি: পৌরসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানের হিড়িক শুরু হয়েছে। কিন্তু তা মানতে নারাজ মেদিনীপুর কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ তথা বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার তাঁকে খোশমেজাজে দেখা গেল বনভোজনের পাশাপাশি মাছধরা, একসঙ্গে বসে পাত পেড়ে খাওয়া এবং বিজেপি কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক আলোচনা করতে।মঙ্গলবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায় বড়কলা গ্রামে কর্মীদের আয়োজনে বনভোজনে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষ।
সামনেই পৌরসভা নির্বাচন। আর এই নির্বাচন প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, “যে ভোটার, সে ভোট দিতে পারছেন না।বাইকের লোক এসে ভোট দিয়ে দিচ্ছে। দু’বছর তিন বছর ধরে মিউনিসিপ্যালিটি বা করপোরেশনের ভোট হচ্ছে না, ফেলা রাখা হচ্ছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।”
বিজেপি এমএলএ, এমপিদের কোটার টাকায় উন্নয়ন করতে না দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন,
“বিরোধীদের কোনো সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি এখানে। বিরোধী দল থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধি এমএলএ, এমপিদের উন্নয়নের টাকায় কাজ করতে দেওয়া হয় না। আটকে রাখা হয়। কি করে বলব এখানে গণতন্ত্র ঠিক আছে।”
রাজ্যে নির্বাচন হয় হিংসার আশ্রয় নিয়ে, এমনই অভিযোগ তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, “নির্বাচনে হিংসা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হয় না। আর সংবিধানের রীতিনীতি একদিকে রেখে এখানে সন্ত্রাসের রাজত্ব চলে, শাসন চলে। শাসনের জায়গার রাজনীতি বেশি হয়।
ভারতবর্ষ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ।বিশাল সংখ্যক মানুষ এখানে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। কিন্তু কোনো একটি পার্টি সেই অধিকার থেকে সকলকে বঞ্চিত করছে। যেটা আমাদের গণতন্ত্রের মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করছে।”
পাশাপাশি রাজ্যপাল স্পিকারের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “রাজ্যপাল যখন স্পিকারের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তখন স্পিকার বিধানসভা ছেড়ে চলে যান। কোনো তথ্য রাজ্যপালকে দেন না।এটাও প্রশাসনিক ভাবে স্পিকারের শোভা পায় না।”
বিজেপি দলে একে অপরের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সে প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় সহ সভাপতির মত, “দলের মধ্যে অনেকের ক্ষোভ বিক্ষোভ থাকতে পারে। সে সমস্যা সমাধানের লোকও আছে। দলের মধ্যে কোনো সমস্যা তৈরী হলে তা ভাবার জন্য বিশেষ কমিটি আছে। কমিটি যা রিপোর্ট দেন সভাপতি সেইমতো ব্যবস্থা নেন।
দলের মধ্যে থেকে, দলের বাইরে কেউ নয়। দলের নিয়মের বাইরেও কেউ নয়। বিজেপি দলে গণতন্ত্র আছে এবং বিভিন্ন স্তর আছে অভিযোগ জানানোর। যাঁরা জানেন না তাঁদের জেনে নেওয়া উচিত। যারা মনে করছে এটা যথেষ্ট নয় তাদের সিস্টেমটা বুঝে নেওয়া উচিত।”
সাংসদ শান্তনু ঠাকুর সহ একাধিক বিজেপি নেতা বনভোজনের আয়োজন করেছিল। দিলীপ ঘোষের এদিনের বনভোজনে যোগদান অনেক রাজনৈতিক তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।