আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ২৫ এপ্রিল:
ভিন জেলা থেকে কাজ করতে এসে লকডাউনের কারণে উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জে আটকে রয়েছেন কয়েকজন মৃৎশিল্পী। রায়গঞ্জের কুমারটুলিতে এখন কাজ বন্ধ। কয়েকটি ক্লাব দুর্গা পুজোর জন্য প্রতিমার অর্ডার দিয়েও বাতিল করে দিয়েছে। স্বাভাবিক কারণেই সমস্যায় পড়েছেন নদিয়া জেলার নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরি গ্রামের মৃৎশিল্পীরা। কুমারটুলি বন্ধ থাকায় মিলছে না মজুরি। দুবেলা খাবার যোগাড় করাটাই এখন চ্যালেঞ্জ তাদের কাছে। বাড়ি যাওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদন করছেন তারা।
নদিয়া জেলার নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরি গ্রামের মৃৎশিল্পী শ্যামল পাল, কামাক্ষা পাল, তপন পাল, সুকুমার সরকার ও রণজিৎ দে প্রতিবছরে মত এবছরেও রায়গঞ্জে দুর্গা প্রতিমা বানাতে আসেন। এই মৃৎশিল্পীরা মার্চ মাসে রায়গঞ্জের কাঞ্চনপল্লি এলাকার চিত্ত পালের বাড়িতে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে প্রতিমা তৈরীর কাজ করে আসছেন। বাড়তি টাকা উপার্জনের জন্য নদিয়া জেলার থেকে রায়গঞ্জে প্রতিমা তৈরির করতে আসেন। কিন্তু এবছর তাদের মাথায় হাত পড়েছে। বাড়তি টাকা উপার্জন তো দূরের কথা তারা এখন বাড়িও যেতে পারছেন না লকডাউনের কারণে। কোরোনা ভাইরাসের জন্য গত মার্চ মাসের ২৩ তারিখ থেকে শুরু হয়েছে লকডাউন। এই লকডাউনের ফলে তাদের কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেখানে তারা কাজ করতে এসেছিলেন সেখানে এই লকডাউনের ফলে দূর্গা প্রতিমা বানানো বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যেসব ক্লাব দুর্গা প্রতিমা বানানোর অর্ডার দিয়েছিলেন তারা এখন বাতিল করে দিয়েছেন। প্রতিমার বরাত বাতিল হওয়ার জন্য চরম সমস্যার মুখে পড়তে হয়েছে নদিয়ার মৃৎশিল্পীদের।
কামাক্ষা পাল নামে এক মৃৎশিল্পী জানিয়েছেন, লকডাউনের আগে আমরা এখানে এসে কাজ করছিলাম। যেই লকডাউন শুরু হল আমাদের কাজও বন্ধ হয়ে গেল। ১৫ দিন ধরে আমরা বসে আছি, কোনও কাজ নেই। দুটা পয়সা বাড়তি উপার্জনের জন্য বাইরে থেকে এখানে কাজ করতে এসেছি। পয়সা রোজগারও বন্ধ হয়ে গেল। কিভাবে সংসার চলবে তা ভাবতে পারছি না। তার মধ্যে এই লকডাউনের কারণে বাড়িও যেতে পারছি না। প্রশাসনও বাড়ি যেতে দিচ্ছে না। বাড়িতে থাকলে বাড়ির লোকজন একটু ভরসা পায়। এদিকে কাজও নেই আবার বাড়িও যেতে পারছি না। এই পরিস্থিতিতে কি করবো ভাবতে পারছি না।