প্রসূতির মৃত্যু, নার্সিংহোমে ভাঙ্গচুর রামপুরহাটে

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৪ এপ্রিল: প্রসূতির মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উঠল রামপুরহাটের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে। যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ নার্সিং হোমের মালিক তথা চিকিৎসক অশোক চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, রোগীর পরিবারের অবহেলার জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে।

জানা গিয়েছে, ৩ সেপ্টেম্বর বীরভূমের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের আয়াস গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিসাইল গ্রামের সন্তান সম্ভবা ইয়াসমিনা বিবি (২২) কে ভর্তি করা হয় রামপুরহাট হাসপাতাল পাড়ার একটি বেসরকারি নার্সিংহোমে। ওইদিনই অস্ত্রপচারের ফলে তিনি কন্যা সন্তানের সন্তানের জন্ম দেন। ৭ সেপ্টেম্বর তাকে কোভিড পরীক্ষা এবং জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু তারা হাসপাতালে ভর্তি না করে বাড়ি নিয়ে চলে যান বলে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের দাবি। ১০ সেপ্টেম্বর নার্সিংহোমে সেলাই কাটাতে আসেন। কিন্তু রোগীর অবস্থা ভালো না হওয়ায় তার সেলাই কাটা হয়নি। এদিকে রোগিণীর অবস্থা খারাপের দিকে যেতে থাকায় পরিবারের লোকজন প্রসূতিকে রামপুরহাটের এক চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বারে দেখান। তিন রোগিণীকে তৎক্ষণাৎ রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশ দেন। সেই মতো তারা রবিবার রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। রাতের দিকে প্রসূতিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানেই চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরেই সোমবার দুপুরে নার্সিংহোমের সামনে মৃতদেহ নিয়ে এসে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসী ও মৃতার আত্মীয়রা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে তৃণমূলের রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের মধ্যস্থতায় ফিরে যান পরিবারের লোকজন।

পরিবারের সদস্য তুফান শেখ, ইদেল শেখরা বলেন, “ভুল অস্ত্রপচারের ফলে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। তাই চিকিৎসার পর রোগিণীকে ছুটি দেওয়ার সময় কোন টাকা নেয়নি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ। এমনকি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা ভুল চিকিৎসার কথা জানিয়েছেন”।

চিকিৎসক অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই প্রসূতির কিছু জটিল রোগ ছিল। তাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা হাসপাতালে ভর্তি না করে গাফিলতি করেছেন। ফলে রোগী দিন দিন দুর্বল হয়ে মৃত্যু হয়েছে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *