আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২৪ ডিসেম্বর : বুধবার রাতে বিজেপির খড়দহ থানা ঘেরাও কর্মসূচিতে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই ঘটনায় বিজেপির অন্তত ৩০ জন কর্মী পুলিশের লাঠির ঘায়ে জখম হয়েছে বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জের প্রতিবাদ জানিয়ে বৃহস্পতিবার ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অর্জুন সিং স্থানীয় মহিলা মোর্চার সদস্যদের নিয়ে খড়দহ থানা ঘেরাও করেন।
সাংসদ অর্জুন সিংয়ের নেতৃত্বে চলে খড়দহ থানার সামনে মহিলা মোর্চা কর্মীদের বিক্ষোভ। অর্জুন সিং বলেন, “আমাদের দলের এক কর্মীকে মিথ্যা মামলা দিয়ে থানায় আটক করেছে পুলিশ। তাঁকে অস্ত্র আইনে মামলা দেওয়া হয়েছে। আমাদের দলের ওই কর্মী কলেজ পড়ুয়া। তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। এই ভাবেই আমাদের কর্মীদের উপর মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। ওই কর্মীর মুক্তির দাবিতে দলের কর্মীরা বুধবার রাতে থানার সামনে যখন বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল, তখন ওদের থানার ভিতরে নিয়ে গিয়ে ওদের উপর নির্মম নির্যাতন করেছে পুলিশ। মহিলাদের এমন ভাবে মেরেছে তারা লজ্জায় বলতে পারছে না। আমরা এই পুলিশি অত্যাচারের বিরুদ্ধে আদালতের দ্বারস্থ হব, মামলা করব। আমি শুনলাম পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদ জানিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব আগামী ২৮ ডিসেম্বর খড়দহ থানা অভিযানের ডাক দিয়েছে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের বঙ্গধ্বনি যাত্রার ভিডিও ফুটেজ তুলেছিল বুলেট। বিজেপি কর্মী বুলেট তৃণমূলের মিছিলের ভিডিও তোলায় তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় তৃণমূল কর্মীরা। এরপর খড়দহ থানার পুলিশ যখন বুলেটকে তৃণমূল কর্মীদের হাত থেকে উদ্ধার করে, অভিযোগ তখন বুলেটের কাছ থেকে পুলিশ নাকি একটি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। তারপরই খড়দহ থানার পুলিশ বুলেট রায় নামে ওই বিজেপি সমর্থককে অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার করে। ওই বিজেপি সমর্থককে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তারের অভিযোগ তুলে তাকে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা খড়দহ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। বেশ কিছুক্ষন বিজেপি কর্মীরা খড়দহ থানার সামনে গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করে। পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে বিজেপি যুব মোর্চার কর্মীরা। বিজেপি যুব মোর্চার নেতা পিন্টু দাস বলেন, “বুলেট রায় বিজেপির সক্রিয় কর্মী, তাকে পুলিশ বিনা অপরাধে থানায় নিয়ে এসে অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার করেছে। বুলেট রায়ের কাছে কোনও অবৈধ অস্ত্র ছিল না। ওকে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। ওর নিঃশর্ত মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত খড়দহ থানার পুলিশের বিরুদ্ধে আমাদের বিক্ষোভ চলবে।” বুধবার রাতের ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবারও দিনভর উত্তপ্ত ছিল খড়দহ থানা চত্বর।
পুলিশের মারে আহতদের রাতেই পানিহাটির ধানকলে বিটি রোডের পাশে একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও তাদের ওপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। বিজেপির পানিহাটি উত্তর মন্ডলের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ অধিকারী জানান, স্থানীয় প্রায় ৭০ জন দুষ্কৃতী তাদের কর্মীদের মারধর করে। রাস্তার উপরে দুটি বোমা ফাটায়। এই ছবি যাতে সিসিটিভিতে না দেখা যায় সেই জন্য আগেই নার্সিংহোম এর সামনের সিসিটিভি টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষন ধরে এই তাণ্ডব চলে। পরে পুলিশ এসে বিজেপি কর্মীদের উদ্ধার করে বলে জানিয়েছেন বিশ্বজিৎবাবু।