
স্বরূপ দত্ত, উত্তরে দিনাজপুর, ২৩ মে: রেশন ও কাউন্সিলরের দেওয়া চালে আর কতদিন চলবে, হাতে কোনও টাকাপয়সা নেই বলে ছোটো ছেলে মেয়েকে দুধ খাওয়াতে পারছি না। এই সময় সরকার পাশে না দাঁড়ালে বৌ সহ ছেলে মেয়েদের নিয়ে মরতে হবে, এরকমই বললেন রায়গঞ্জ ব্লকের নিউ উকিলপাড়ার নট্টোপাড়ায় বাজনার সাথে যুক্ত মানুষরা। চোখের জলে কাঁদতে কাঁদতে একথাগুলি বলেন।
রায়গঞ্জ ব্লকের নিউ উকিলপাড়ার নট্টোপাড়ায় প্রায় ২০০টি পরিবার বাজনার সাথে যুক্ত। লকডাউনের কারনে নেই কোনও বিয়ের অনুষ্ঠান, কোনও অন্যপ্রাশন বা কোনও পুজোপার্বন। বিয়ে, অন্যপ্রশনের যা বায়না হয়েছিল তাও বাতিল হয়ে গিয়েছে। এক বাজনাদার বলেন, প্রতিবছর এই সময় আমাদের বহু বিয়ে ও অন্যপ্রশনের কাজ থাকে। বছরের কয়েকটি মাসে আমাদের কাজ করে সারাবছর সংসার চালাই। কিন্তু করোনার জন্য লকডাউনের ফলে সরকার থেকে নির্দেশ দিয়েছে জমায়েত করে কোনও অনুষ্ঠান করা যাবে না। তার জন্য বিয়ে, অন্যপ্রাশন ও পুজোপার্বন সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যা অর্ডার এসেছিল তা সবই বাতিল হয়ে গিয়েছে। ফলে চরম সমস্যায় পড়েছে বাজনাদাররা। রেশন ও কাউন্সিলর যা দিয়েছিল তা প্রায় শেষ।
প্রদীপ নট্ট নামে এক বাজনাদার কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার ছোটো ছোটো তিন বাচ্চা আছে। তাদের দুধ খাওয়াতে পারছি না। হাতে টাকাপয়সা পাঁচজন সংসার আমার। সরকারের কাছে আবেদন করছি আমাদের একটু সাহায্য করুন। তা না হলে বাচ্চাদের নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে। মাধবী নট্ট নামে এক গৃহবধূ জানিয়েছেন, স্বামী বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাজনা বাজিয়ে সংসার চালাতো। এখন লকডাউনের কারনে কোন জায়গায় কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে না। ফলে চরম অসুবিধায় দিন কাঁটছে। বাচ্চাদের খাওয়াতে পারছি না ঠিক মতো। রোজগার বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এই সময় সরকারি সাহায্য পেলে ছেলেমেয়েদের নিয়ে সংসার চালানো সম্ভব নয়।