রাজ্যে করোনা- মুক্ত এলাকায় উপসর্গহীন আক্রান্ত খুঁজতে শুরু হবে পুল টেস্ট

আমাদের ভারত, ১৯ এপ্রিল: রাজ্যে করোনা সংক্রামণের বাস্তব চিত্র বুঝতে বরাবর বেশি টেস্ট করার উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ উপসর্গহীন করোনা আক্রান্তের মোকাবিলায় শুধু টেস্টই একমাত্র হাতিয়ার। সর্দি-কাশি, গলা ব্যাথা নেই, জ্বর নেই, শ্বাসকষ্ট নেই।আপাত ভাবে পুরো সুস্থ। কিন্তু এইরকম উপসর্গহীন ব্যক্তির শরীরে ঘাঁটি গড়তে পারে করোনাভাইরাস। আর যার মাধ্যমে মারণ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। ইতিমধ্যেই এই উপসর্গহীন করনা আক্রান্তের সংখ্যা বিভিন্ন দেশে ক্রমেই বাড়ছে। এই একই প্রবণতা ভারতেও। দেখা গেছে কর্নাটকের মোট করোনা আক্রান্তের ৬০% উপসর্গহীন। এই প্রবণতা চিন্তা বাড়িয়েছে পশ্চিমবঙ্গেও। এখানে ১০ জেলা করোনা মুক্ত। তাই এবার উপসর্গহীন করোনা মোকাবিলায় পুল টেস্টের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর।

শনিবার পুলটেস্টের নির্দেশে কেউ জারি করেছে স্বাস্থ্য ভবন। আইসিএমআর ভাইরাস আক্রান্তদের চিহ্নিত করার পদ্ধতি হিসেবে ইতিমধ্যেই পুল টেস্টের পরামর্শ দিয়েছে। বর্তমানে যেভাবে সন্দেহভাজন করো ষনা আক্রান্তের লালা রসনমুনা পরীক্ষা করা চলছে। সেই একই প্রযুক্তিতে টেস্ট করা হবে‌ তবে পার্থক্য অন্য ক্ষেত্রে।পুল টেস্টে একজনের বদলে একসঙ্গে দুই থেকে পাঁচ জনের লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। সমস্ত নমুনা একসঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হবে। এরপর পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় মিশ্রিত নমুনার নেগেটিভ হলে বোঝা যাবে যে ক’জন ব্যক্তির লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তাদের মধ্যে করোনার অস্তিত্ব নেই। আর এর উল্টোটা হলে ধরে নেওয়া হবে এই পুলের মধ্যে একজন কেউ করোনায় আক্রান্ত। সেক্ষেত্রে ওই পুলের যে কজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল তাদের আবার আলাদা করে কবিড-১৯ পরীক্ষা হবে।

আই সি এম এর নির্দেশিকায় যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ দুই শতাংশেরও কম বা একেবারেই নেই এলাকাতেই হবে এই পুল টেস্ট। ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত সংক্রমণের পরিমাণ যেখানে সেখানেও এক টেস্ট হতে পারে। তবে উপসর্গহীন মানুষের ক্ষেত্রেই এই পুলটেস্ট হবে। এছাড়াও যারা পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন তাদের পরীক্ষা করতেই হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে আইসিএমআর।

সংক্রমণ যে এলাকায় ৫ শতাংশের বেশি সেখানে পুলটেস্ট হবে না। মূলত উপসর্গহীন রোগীদের সন্ধান করতেই এই পুলটেস্ট দ্রুত এবং কার্যকরী পদ্ধতি।

সারাদেশে উপসর্গহীন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। উপসর্গহীন আক্রান্ত বাহক হিসেবে রোগ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করছে।

পুলটেস্টে একটি কিটে একসঙ্গে পাঁচ জনের পরীক্ষা করা যাচ্ছে। একটি কিটে একজনের বদলে পাঁচজনেরপরীক্ষা হলে তাতে খরচ ও সময় দুটোই বাঁচছে।

পশ্চিমবঙ্গে এখনো পর্যন্ত ১০টি জেলায় করোনা আক্রান্ত কোনো খবর নেই। ফলে সেই সমস্ত জায়গায় উপসর্গহীন আক্রান্ত রয়েছে কিনা তা চিহ্নিত করবে এই টেস্ট। এছাড়াও রেড জোনের পার্শ্ববর্তী এলাকা যেখানে সংক্রমণ ছড়ায়নি সেখানেও হবে এই পুলটেস্ট।

সময় বাঁচিয়ে টেস্টের সংখ্যা বাড়াতে এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট আটটি পরীক্ষা কেন্দ্র রয়েছে।তার মধ্যে তিনটি বেসরকারি। খুব তাড়াতাড়ি মালদা মেডিকেল কলেজ এবং আরজিকর মেডিকেল কলেজে করো না পরীক্ষা চালু হবে বলে জানা গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *