কাতার, প্রদীপের নিচেই নাকি অন্ধকার

আমাদের ভারত, ২২ নভেম্বর: প্রায় গোটা বিশ্বের নজর কাতারের দিকে। কোটি কোটি ডলার নাকি উড়ছে এই বিশ্বকাপে ফুটবলের আয়োজনকে ঘিরে। উদ্বোধন মাতাতে আসছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খ্যাতনামা শিল্পীরা। কিন্তু প্রদীপের নিচেই নাকি অন্ধকার।

কাতারে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন নিয়ে অনেক দিন ধরেই সমালোচনা হচ্ছে, এত ছোটো দেশে এত বড়ো মাপের প্রতিযোগিতা কেন আয়োজন করতে দেওয়া হল? তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। প্রাক্তন ফিফা সভাপতি শেপ ব্লাটারও মেনে নেন, কাতারকে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। তবে বিশ্বকাপ এগিয়ে আসার সঙ্গে বিতর্ক ফিকে হয়ে যায়।

বিতর্ক কাতার ঘিরে থাকছে। তার উপর নজর কেড়েছে কাতারের জনবিন্যাস। সেখানে নারীর চেয়ে পুরুষের আনুপাতিক হার এবং সংখ্যা অনেকটাই বেশি। কাতারে মহিলাদের সংখ্যা সাত লক্ষেরও কম।
• কাতারের বিরুদ্ধে ওঠা সবচেয়ে বড় অভিযোগ হল অমানবিক আচরণ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে কাতারে কাজ করতে আসেন শ্রমিকরা। অভিযোগ, অনেকে নাকি এই দেশে এসে অমানবিক আচরণের শিকার হন।
• ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানের ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের তথ্য বলছে, কাতার বিশ্বকাপ আয়োজনের লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার পর অর্থাৎ ২০১০ সাল থেকে সে দেশে নিহত হয়েছেন ৬,৫০০ বিদেশি শ্রমিক।
• নিহত শ্রমিকরা ভারত, নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের নাগরিক।
• শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন বা আইএলও-র তথ্যও ভয়ানক। তারা বলছে, ২০২১ সালেই কাতারে ৫০ জনের বেশি শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
• ৫০০ শ্রমিক গুরুতর ভাবে আহত হয়েছে।
• ২০১০-২০২২ সালের তথ্য বলছে, কাতারে আহত শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার।

পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যা প্রায় দশ কোটি। সেখানে মাত্র ২৫ লক্ষ জনসংখ্যার দেশ কাতারে হচ্ছে বিশ্বকাপ। কেবল যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রেই প্রায় এত লোক। কয়েক দশক আগেও কাতার ছিল ‘অশিক্ষিত’, অনুন্নত দেশ। সমালোচকদেরমুখে তুড়ি মেরে সেই কাতারই ছিনিয়ে নিয়েছে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজনের দায়িত্ব। গোটা আরব দুনিয়ায় এই প্রথম। এশিয়ায় জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পরেই তৃতীয় আয়োজক দেশ।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here