আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দিবসে সাংবাদিকদের কুর্নিশ জানালেন রেল পুলিশ থেকে রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ৩ মে: পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে ও রামপুরহাট শহরের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতায় লকডাউনের পর দিন থেকে ভবঘুরেদের দু’বেলা সেবা করে চলেছেন সাংবাদিকরা। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দিবসে তাই সাংবাদিকদের এই ভূমিকার জন্য কুর্নিশ জানিয়েছেন পুলিশ প্রশাসন থেকে সর্বস্তরের মানুষ। সাংবাদিকরাও শপথ নিয়েছেন তাঁরা খবর পরিবেশনের পাশাপাশি মানুষের সেবায় নিয়জিত থাকবেন।

প্রসঙ্গত, লকডাউনের একদিন পর থেকে রামপুরহাট স্টেশন সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অভুক্ত মানুষদের মুখে দু’বেলা অন্ন তুলে দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন বীরভূম জার্নালিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এবং রামপুরহাট প্রেসক্লাব। আড়াইশো মানুষকে দু’বেলা অন্ন পৌঁছে দেওয়া হয় রামপুরহাট স্টেশন সহ শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অভুক্ত মানুষদের। একাজে যিনি প্রথম উৎসহ যুগিয়েছিলেন তিনি হলেন রামপুরহাট মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সৌম্যজিৎ বড়ুয়া। তার পর থেকে নিজেদের পেশার দায়িত্ব পালনের পর সময় বাঁচিয়ে অভুক্তদের অন্ন সেবা করে চলেছেন সাংবাদিকেরা। রবিবার এই সেবা ৩৯ দিনে অতিক্রম করল। অভুক্তদের দুবেলা অন্ন তুলে দিতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রামপুরহাট মহকুমা শাসক শ্বেতা আগরওয়াল, রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশ্বিনী তেওয়ারি সহ শহরের বস্ত্র ব্যবসায়ী, ধর্মীয় সংগঠন, ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকশিক্ষিকা, কৃষক, বেকার যুবক, কয়েকটি কোম্পানি, ক্লাব,
আরপিএফ। এছাড়া স্টেশনে সবরকম ভাবে সহযোগিতা করে চলেছেন আরপিএফ এবং জিআরপি।

রামপুরহাট রেলপুলিশের আধিকারিক অমিত কুমার গিরি বলেন, “প্রথম দিন থেকে আমরা সাংবাদিকদের পরিশ্রম দেখে আসছি। তাঁরা যেভাবে ভবঘুরেদের খাওয়াচ্ছেন তার তুলনা হয় না। নিজেদের কাজ সামলেও ভবঘুরেদের জন্য সময় দিয়ে সাংবাদিকরা নজির সৃষ্টি করেছেন। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দিবসে আমরা তাদের কুর্নিশ জানাই”।

সাংবাদিক অমলেন্দু মণ্ডল, অঞ্জন দে, মহম্মদ নাসিরুদ্দিন, প্রীতম দাস, অলোক মণ্ডলরা বলেন, “সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ পরিবেশনের পাশাপাশি সমাজসেবার সঙ্গেও যুক্ত থাকে। এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে সেটা প্রমাণ করে দিয়েছে। একটানা ৩৯ দিন ধরে দুবেলা মানুষের সেবা করে বুঝিয়ে দিয়েছে শুধু কলম-বুম নয়, হাতাখুন্তি ধরে মানুষের সেবাও করতে পারেন সাংবাদিকরা। তবে স্টেশনে আরপিএফের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কারণ দেরিতে হলেও তারাই সুষ্ঠভাবে খাবার পরিবেশনে সহযোগিতা করেছেন”।

সাংবাদিকদের কুর্নিশ জানিয়েছেন রামপুরহাট পুরসভার চেয়ারম্যান অশ্বিনী তেওয়ারিও। তিনি বলেন, “আমরা কিছু চাল ডাল দিয়ে সাহায্য করছি ঠিকই। কিন্তু সমস্ত কাজ শেষ করে যারা মানুষের মুখে হাসি ফোটাচ্ছেন তাঁরাই আসল হিরো”।

ব্যবসায়ী আনন্দ আগরওয়াল বলেন, “আমরা ব্যবসায়ীরা সাংবাদিকদের পাশে থেকে সহযোগিতা করেছি। কিন্তু সাংবাদিকদের পরিশ্রমকে কুর্নিশ জানাতে হয়। কারণ তাঁরা নিজেদের কাজ সামলেও সময় বের করেছেন ভবঘুরেদের জন্য। মনে করলে নাও করতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা এগিয়ে এসে বড় মনের প্রমাণ দিয়েছেন”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *