বেহালার সরশুনার হোমে সাত নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন, পলাতক অভিযুক্ত রাকিবুল শেখ

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২৭ নভেম্বর: হোমে যে মহিলারা এমনকি নাবালিকারাও মোটেই নিরাপদ নয় , ফের যেন তার প্রমাণ মিলল বেহালা সরশুনার একটি হোমের ঘটনায়। ওই হোমে থাকা নাবালিকাদের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন চালানোর অভিযোগ উঠল ওই হোমেরই দর্জির বিরুদ্ধে। চলতি মাসের ১৭ তারিখে এই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ। একইসঙ্গে এক্ষেত্রে ওই নাবালিকারা পুলিশ এবং হোম কর্তৃপক্ষের কোনও সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ, ১৭ নভেম্বর ঠান্ডা পানীয় খাওয়ানোর নাম করে সাত নাবালিকাকে বহুক্ষণ ধরে যৌন হেনস্থা করে রাকিবুল শেখ। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক। নাবালিকাদের পরিবারের অভিযোগ, হোম কর্তৃপক্ষ হুমকি দিয়েছে, থানায় অভিযোগ করা হলে মেয়েদের আর হোমে রাখা হবে না। পুলিশ বিষয়টি বাইরে মিটমাট করে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে বলে নাবালিকাদের পরিবারের অভিযোগ।

নাবালিকাদের উপর যৌন নিগ্রহের ঘটনায় পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিতভাবে পকসো আইনে মামলা না করায় স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও সরশুনা থানার কেউ এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।

আজ ঘটনাস্থলে যান রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান অনন্যা চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি ঘটে থাকলে খুবই নিন্দনীয় ঘটনা। তদন্তে কেউ দোষী বলে প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এই ঘটনার পরে ওই নাবালিকাদের পরিবার সহ আরো অনেক নাবালিকার পরিবারের লোকজন তাদের সন্তানদের বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, তাদের শিশুরা এখানে সুরক্ষিত নয়। ঘটনার পর থেকে তারা আতঙ্কিত বোধ করছেন। কী করে এত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা কোনও তদন্ত না করে হোম কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ ধামাচাপা দিতে চাইছে, সেটাই তাদের কাছে বিস্ময়ের।

শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী সরশুনা থানা এবং হোম কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে বেরিয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানালেন যে মহিলা হোম হওয়া সত্বেও এখানে একজন পুরুষ থাকত এবং তিনি নিজের চোখে দেখে এসেছেন সেই পুরুষ কর্মীর বিছানা পাতা রয়েছে। পাশাপাশি সরশুনা থানার ভূমিকা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করলেন। তিনি পরিষ্কার জানালেন থানায় অবিভাবকদের অভিযোগ গ্রহণ না করে অভিভাবকদের থেকে জোর করে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। তিনি নিজেও প্রশ্ন তুলছেন, শিশুদের যেখানে সম্মানহানি হয়েছে সেখানে কোনো ইনভেস্টিগেশন ছাড়া অভিযুক্তকে সরশুনা থানা কিভাবে ছেড়ে দিল, তার বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু না করে। যেখানে মমতা ব্যানার্জি সবসময় চাইছেন শিশু সুরক্ষা আরও জোরদার করতে সেখানে সরসুনার এই হোম এবং সরশুনা থানার ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করলেন এবং পুরো বিষয়টা তিনি রিপোর্টে জানাবেন এবং মন্ত্রী শশী পাঁজা’কেও পুরো বিষয়টি জানাবেন। এ বিষয়ে আগামীকাল থানায় রিপোর্ট চেয়ে পাঠাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *