আমাদের ভারত, ১২ সেপ্টেম্বর: কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের নির্দিষ্ট বিষয় ভিত্তিক পড়াশোনার পাশাপাশি এবার থেকে রামচরিত মানস ও মহাভারত পড়ানো হবে। এমনটাই নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ সরকার। নতুন পাঠ্যসূচিতে রামের চরিত্র বিশ্লেষণ ছাড়াও পড়ানো হবে রামের মত একজন ঐশী ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তি কতটা দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। বিজেপি শাসিত এই রাজ্যের উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন ২০২০ সালে রাজ্য যে নতুন শিক্ষানীতি গৃহীত হয়েছিল তাতে এই পাঠ্যসূচিকে যুক্ত করা হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের সমস্ত কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছাত্রীকে নতুন পাঠ্যসূচি নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে বলে জানিয়েছে রাজ্যের সরকার।
রামচরিত মানস ছাড়াও পাঠক্রমে থাকছে মহাভারত, যোগ, প্রাণায়ামের মত বিষয়। উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী জানিয়েছেন, “আমরা শুধু ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষিত করব না তাদের চরিত্র গঠনের উপরেও জোর দেবো।”
নতুন পাঠক্রমে চক্রবর্তী রাজাগোপালাচারী লেখা মহাভারতের মুখবন্ধের একটি ইংরেজি অনুবাদ পড়ানো হবে। যোগ এবং প্রাণায়াম শিক্ষায় শেখানো হবে ওঁ ধ্যান এবং বিভিন্ন মন্ত্রোচ্চারণ কিভাবে করতে হয় তাও। একসঙ্গেই স্নাতক পড়ুয়াদের পড়তে হবে শ্রীরাম চরিত মানষের ফলিত দর্শন।
নতুন বিষয়টির বিভিন্ন অধ্যায়ে, বেদ উপনিষদ এবং পুরাণের চার যুগ, ভারতীয় সংস্কৃতির শিকড়ে আধ্যাত্মিকতার চর্চা, ভারতের দৈব অবতারের অস্তিত্ব, ঐশী শক্তি বহন করার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, মানব চরিত্রের সর্বোচ্চ যোগ্যতা: পিতার প্রতি রামচন্দ্রের অপার আনুগত্য। এছাড়াও শ্রীরামের ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতা নিয়েও আলাদা একটি অধ্যায় থাকবে এই বিষয়ে, নাম হবে রাম সেতু নির্মাণ রামের ইঞ্জিনিয়ারিং দক্ষতার নিদর্শন।
মধ্যপ্রদেশের উচ্চ শিক্ষা মন্ত্রী বলেছেন এই বিষয়গুলি পড়ুয়াদের মূল্যবোধ বাড়াবে। তাদের চারিত্রিক গঠন দৃঢ় করবে কারণ রামচরিত মানষ এবং মহাভারত আমাদের জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু শেখায়।
মোট ৫৬ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ১৪০০টি কলেজ রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। ১৩ লক্ষ ছাত্র ছাত্রী সেখানে পড়ে। যার মধ্যে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া কমপক্ষে ২ লক্ষ। করোনা পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ থাকার পর আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সেখানে কলেজ খুলছে, অর্ধেক ছাত্রছাত্রী নিয়ে সেখানে ক্লাস হবে। আর নতুন ক্লাসের নতুন পাঠক্রম অনুযায়ী পড়াশোনা হবে বলে ঘোষণা করেছে সরকার।
বিরোধীদের বক্তব্য শিক্ষা এবং ধর্মকে কখনো মিলিয়ে ফেলা উচিত নয়। তাদের দাবি, শিক্ষায় রামচরিত মানস বা মহাভারতকে যুক্ত করার বিরোধী নন তারা, তবে বিশেষ একটি ধর্মের পুরাণের গুরুত্ব না দিয়ে বাকি ধর্মগ্রন্থগুলিকেও ছাত্র-ছাত্রীদের চরিত্র গঠনের জন্য ব্যবহার করা উচিত ছিল।