পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২২ নভেম্বর: করোনা সংক্রমণে মারা গেলেন বালুরঘাটের বিশিষ্ট দন্ত চিকিৎসক তথা সমাজসেবী ডা. রামেন্দু নারায়ণ ঘোষ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর।
গত নভেম্বর মাসের ১ তারিখে করোনা সংক্রমিত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ১৪ দিন পরে করোনার রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও, ফুসফুসের অতি সংক্রমণের কারণে শনিবার বিকালে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়েছিল। শনিবার গভীর রাতে সেখানেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। রবিবার দুপুরেই কলকাতা থেকে মরদেহ নিয়ে রওনা দিয়েছেন তার পরিবারের লোকেরা। মৃত্যুকালে তার দুই পুত্র ও স্ত্রীকে রেখে গেলেন। চিকিৎসক ও সমাজসেবী হিসাবে জেলায় সুখ্যাতি থাকা রামেন্দুবাবুর এমন আচমকা মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা দক্ষিন দিনাজপুর জেলায়।
চিকিৎসার পাশাপাশি জেলাজুড়ে নানা সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। প্রয়াস আত্রেয়ী নামে জেলার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন তিনি। এছাড়াও ১৯২৮ ক্লাব, সকাল, বালুরঘাট ট্রেকার্স ইউনিট সহ একাধিক সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছাত্র ছিলেন রামেন্দুবাবু। কুমারগঞ্জ থানার গোপালগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা হলেও পতিরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন তিনি। কলকাতার রফি আহমেদ ডেন্টাল কলেজে পঠনরত অবস্থা থেকেই বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি। একবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর দাঁতের চিকিৎসা করে সুস্থ্য করেছিলেন তিনি। প্রবীন এই চিকিৎসকের সুনাম শুধু বালুরঘাটেই নয়, গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়েই সুখ্যাতি ছিল তাঁর। ফ্রি ক্যাম্প করে দাঁতের চিকিৎসায় জেলায় অন্যতম পথিকৃৎ ছিলেন তিনি। পরবর্তীতে বালুরঘাটে বসবাস করলেও প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত গোপালগঞ্জে নিজের বাড়িতে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিতেন।
ছবি: সমাজসেবামূলক কাজের সময় ডা. রামেন্দু ঘোষ।
রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষক পবিত্র মহন্ত ও বঙ্গরত্ন অমূল্য রতন বিশ্বাস জানান, করোনায় আমরা জেলার একজন চিকিৎসক, শিল্পী ও সমাজসেবীকে হারালাম। চিকিৎসার পাশাপাশি সমাজসেবায় তার অন্যতম অবদান রয়েছে এজেলায়। তার এমন অকাল মৃত্যুতে সকলেই বাকরুদ্ধ।