স্কুল চত্বরেই শিক্ষক অভিভাবকদের হাতাহাতিতে উত্তপ্ত পুরুলিয়ার পাড়া থানার সরবেড়িয়া গ্রাম

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ২৪ মার্চ: শিক্ষকের অনিয়মিত উপস্থিতির প্রতিবাদের ঘটনা আকার ধারণ করল বিক্ষোভে। সেই বিক্ষোভ তুমুল গন্ডগোলের মধ্য দিয়ে হাতাহাতিতে পরিণত হল। পুরুলিয়ার পাড়া থানার সরবেড়িয়া গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন অভিভাবকরা। চড়াও হন ওই শিক্ষকের উপর। শিক্ষকও নাছোড় বান্দা। কিল ঘুসি দিয়ে বসলেন অভিভাবকদের। এমনই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পাড়া এলাকায়। ক্ষুদে পড়ুয়াদের সামনেই শিক্ষক অভিভাবকদের হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ায় শিক্ষা লাভের প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্ম দিল। তবে ঘটনার তিন ঘন্টা পরেও কোনো পুলিশ কর্মী বা শিক্ষা দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দেখা মিলল না ওই গ্রামে।

বিক্ষোভকারীদের সাথে কথা বলে জানতে পারা গিয়েছে, অনিয়মিতভাবে স্কুলে আসেন এই বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষকই। মিড ডে মিল নিয়মিত হয় না। বারবার মৌখিকভাবে জানানো হলেও বিষয়টি নিয়ে কর্ণপাত করেননি প্রধান শিক্ষক। তাই গত বৃহস্পতিবার স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা উপস্থিত থাকলেও শিক্ষকের অনুপস্থিতির কারণে তালা ঝুলিয়ে দেন গ্রামের মানুষজন।

অভিভাবকদের দাবি, স্কুল পরিদর্শকের কথামতো তালা দেওয়া হয়েছিল। যদিও আজ শুক্রবার সকালে খোলার কথা ছিল তালা। কিন্তু সময় মতো তালা না খোলায় বিদ্যালয়ের পঠনপাঠন থেকে বঞ্চিত হয় পড়ুয়ারা। বেলা এগাটার পর প্রধান শিক্ষক সহ দুই শিক্ষক স্কুলে পৌঁছতেই ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বিক্ষোভ দেখান। দুই পক্ষের মধ্যে বচসা শুরু হয়ে যায়। বচসা চরমে উঠে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায় অভিভাবক ও শিক্ষকের মধ্যে। গ্রামবাসীদের তৎপরতায় তা নিয়ন্ত্রণে এলেও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্কুল চত্বর।

প্রধান শিক্ষক কমল কর্মকার, বিদ্যালয় ও সহশিক্ষকদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমার স্কুলে সব শিক্ষকরা পড়াশোনার বিষয়ে কোনও শিথিলতা দেখান না। ছাত্র ছাত্রীদের খাতা দেখলেই বোঝা যাবে। অভিভাবক হয়ে যেটা ওঁরা করলেন সেটা কাঙ্ক্ষিত নয়।”

আজ স্কুল খোলার সময় ওই উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলেও দুপুর ১ টার পর স্কুলে যান পাড়া ব্লকের জয়েন্ট বিডিও। তাঁর উপস্থিতিতেই গ্রামের লোক স্কুলের গেটের তালা খুলে দেন। তারপরেই ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে। পাশাপাশি জয়েন্ট বিডিও অর্ঘ্য ভট্টাচার্যের সঙ্গে গ্রামবাসীদের একটি আলোচনা হয়, সেখানেই এই স্কুলের শিক্ষকদের অনিয়মিত আসা এবং মিড ডে মিলের রান্না অনিয়মিত হওয়ার অভিযোগ জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *