মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বাঁচান, এইভাবে যেন কোনও মহিলার উপরে অত্যাচার না হয়, কাতর আবেদন খন্ডঘোষের রাখি রায়ের

আমাদের ভারত, পূর্ব বর্ধমান, ২৩ জুন :
পুলিশ ঘরে ফেরালেও বাড়িতে এসে হামলা করছে তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা। এমনকি আমায় বেধড়ক মারধর করে শাড়ি ব্লাউজ পর্যন্ত ছিঁড়ে দিয়েছে ওদের ছেলেরা। এমনই গুরুতর অভিযোগ করলেন খন্ডঘোষের উখরিদ গ্রামের বাসিন্দা রাখি রায়।

নির্বাচনের পর থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ভয়ে স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে বাঁকুড়ার ইন্দাসে গিয়ে লুকিয়ে ছিলেন রাখি রায়। খন্ডঘোষ থানার পুলিশের সহযোগিতায় তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। কিন্তু পুলিশ চলে যেতেই তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূল কংগ্রেসের দুষ্কৃতীরা। তৃণমূল কংগ্রেসের ছেলেরা তাঁর শাড়ি ব্লাউজ ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। এরপর তৃণমূল কংগ্রেসের ছেলে ও মেয়েরা তাঁকে বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ তাঁর।

কিন্তু কেন তাঁর উপরে বারবার হামলা হচ্ছে?

রাখি রায় বলেন, ‘আমি আগে ১০০ দিনের কাজে দিনমজুরি করতাম। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের কথামতো না চলার জন্য আমার একশো দিনের কাজ চার বছর আগে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ইন্দিরা আবাসনের বাড়ি পাওয়ার জন্য তালিকায় নাম উঠলেও সেই বাড়ি পাইনি। এরপর আমি প্রতিবাদে বিজেপি দলের হয়ে প্রচার করতে শুরু করি। এলাকার মহিলাদের একত্রিত করতে শুরু করি। নির্বাচনে বিজেপির হয়ে প্রচার করতে থাকি। তখন তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা প্রাণনাশের হুমকি দেয়। তাই নির্বাচনে আবার তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসতেই আমি গ্রাম ছেড়ে পরিবার নিয়ে পালিয়ে যাই। খন্ডঘোষ থানার পুলিশের সহযোগিতায় দিন কয়েক আগে বাড়ি ফিরে আসি। কিন্তু পুলিশ চলে যেতেই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা আমার বাড়িতে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। তাদের ছেলেরা আমার শাড়ি ব্লাউজ ছিঁড়ে মারধর করতে থাকে। মেয়েরাও বাঁশ দিয়ে পেটায়।”

তাঁর প্রশ্ন, “আমি একজন মহিলা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও একজন মহিলা। তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারেন। অথচ আমি একজন তফশিলি পরিবারের মহিলা হয়েও কেন রাজনীতি করতে পারবো না?’ কাঁদতে কাঁদতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করে বলেন, “”মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বাঁচান, এইভাবে যেন কোন মহিলার উপরে অত্যাচার না হয় সেটা আপনি দেখুন।

পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরে ভয়ে অনেক বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া হয়েছিল। কিন্তু আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি এই রাজ্যের কাউকে কোথাও ঘরছাড়া হয়ে থাকতে হবে না। তাদের তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা বাড়ি ফিরিয়ে আনবে।সুরক্ষা দেবে। এরপর যদি এ রকম ঘটনা ঘটে থাকে আমরা কড়া ব্যবস্থা নেবো। পুলিশ প্রশাসনকেও বলা আছে তারা আইনত ব্যবস্থা নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *