সন্ত্রাসে আর্থিক মদত, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিকের

আমাদের ভারত, ২৫ মে: যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা পেলেন কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা ইয়াসিন মালিক। সন্ত্রাসী কাজকর্মে আর্থিক যোগানের মামলায় তার এই সাজা ঘোষণা করেছে আদালত। দিল্লির বিশেষ এনআইএ আদালত বুধবার বিকেলে এই রায় জানায়। এই দুটি মামলায় ইয়াসিনকে যাবজ্জীবন সাজা শোনানো হয়েছে। তাকে জরিমানাও করা হয়েছে।

ইউপিএ আইনের অধীনে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এএনআই ইয়াসিনের মৃত্যুদণ্ড চেয়েছিল। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিরোধিতা করেননি ইয়াসিন।

জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন বা ইউপিএ আইনে সন্ত্রাসে আর্থিক যোগানের অপরাধে আগেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার অপরাধে ১২১ ধারায় ইয়াসিনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাজার দাবি জানিয়েছিল এনআইএ। মৃত্যুদণ্ডের আর্জি জানানো হয়, কিন্তু ইয়াসিনের আইনজীবীরা মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবনের আর্জি জানিয়েছিলেন।

নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন ইয়াসিন। আদালতে তিনি বলেন, “এনকাউন্টারে বুরহান ওয়ানি মৃত্যুর পর ৩০ মিনিটের মধ্যে আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অটল বিহারী বাজপেয়ী আমাকে পাসপোর্ট দিয়েছিলেন। আমি অপরাধী নই। তাই আমাকে নিজের বয়ান রেকর্ড করার সুযোগ দিয়েছিল ভারত।” তিনি জানান, ১৯৯৪ সালে অস্ত্র ত্যাগের পর থেকে অহিংস নীতি অনুসরণ করে গিয়েছেন তিনি। ইয়াসিন জানিয়েছেন, দেশের ৭ প্রধানমন্ত্রীর সময়কালে তিনি রাজনীতি করেছেন। তিনি গত ২৮ বছর উপত্যকায় সন্ত্রাস অথবা হিংসার সঙ্গে তার কোনো রকম সংযোগ ছিল না।

তদন্তকারীদের দাবিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ইয়াসিনের বক্তব্য ছিল গত ২৮ বছরে কোনো রকম সন্ত্রাসী কাজকর্ম বা হিংসা নাশকতার সঙ্গে তিনি যুক্ত সেটা প্রমাণিত হলে মৃত্যুদণ্ড মাথা পেতে নেবেন। কোনো ভাবেই প্রাণ ভিক্ষা চাইবেন না। আদালত যা রায় দেবে মাথা পেতে নেবেন।

আদালত জানায়, উপত্যকায় নাশকতামূলক কাজকর্ম চালু রাখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে নেটওয়াক তৈরি করেছিলেন ইয়াসিন। জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের নামে সন্ত্রাসী কাজকর্ম চালু রাখতে অর্থসংস্থান করত ইয়াসিন এই নেট ওয়ার্কের মাধ্যমে।

ইয়াসিনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণাকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই থমথমে ছিল উপত্যাকা। একাধিক এলাকায় পাথর ছোড়ার ঘটনার কথা জানা গেছে। বেশির ভাগ দোকান বাজার বন্ধ ছিল। রাস্তায় যানবাহন চোখে কম পড়েছে। শ্রীনগরের মতো স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *