সোনাগাছিতে ফুর্তি করতে গিয়ে বিপদে যুবক, ৫ লক্ষ টাকা চেয়ে সোজা বাড়িতে হাজির যৌনকর্মী

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২০ জানুয়ারি: অন্ধকার নিষিদ্ধপল্লীতে ভালবাসার খোঁজ পেয়ে যৌনকর্মীর মানসিক ভাবে কাছাকাছি চলে এসেছিলেন যুবক। কিন্তু পরবর্তী কালে জীবনের গতিপথ বদলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। কিন্তু এত সহজে তাকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি মানতে পারেননি ওই যৌনকর্মী তরুণী। উলটে নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলে দাবি করে সোজা পাইকপাড়ায় যুবকের বাড়িতে এসে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করেন। হতভম্ব ওই যুবক দ্বারস্থ হয়েছেন চিৎপুর থানার।

শিয়ালদা আদালতের নির্দেশে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে তোলাবাজির মামলা শুরু হয়েছে তবে একইসঙ্গে ওই তরুণীর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার দাবি সঠিক কি না, তা জানতে তারও মেডিক্যাল টেস্ট করানো হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, উত্তর কলকাতার পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা ওই যুবক দু’বছর আগে সোনাগাছির যৌনপল্লিতে যান। সেখানেই তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় ওই যৌনকর্মী তরুণীর। একাকী ওই যুবক ভালবেসে ফেলেন ওই যৌনকর্মী তরুণীকে। সেকথা পুলিশের সামনে স্বীকার করেছেন ওই যুবক।

কিন্তু নিজের সমাজে ফিরে এসে লোক জানাজানির ভয়ে ওই তরুণীকে নিজের পরিচয় দিতে ভয় পেয়ে যান যুবক। নিষিদ্ধ পল্লি থেকে তরুণীকে বিয়ে করলে সুস্থ সমাজের মান-সম্মান চলে যাবে, এই আশঙ্কায় বেশ কিছুদিন দোটানায় ছিলেন। কিন্তু তরুণীকে ভালোবাসার সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না। এর মধ্যে ওই তরুণী তার ভালোবাসাকে হাতিয়ার করে বিভিন্ন সময়ে মোট দু লক্ষ টাকা নিয়ে নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই যুবক মনস্থির করেন নিজের সম্মানের খাতিরে তাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতেই হবে, ভুলে যেতে হবে তরুণীকে। আর তাই তারপর তিনি সোনাগাছিতে যাওয়া ছেড়ে দেন।

পুলিশ জানতে পেরেছে যুবতীর আসল বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনার হাড়োয়ায়। কিন্তু ঘর ভাড়া নিয়ে দমদমে থাকত সে। এদিকে যুবকটি সহজে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এলেও ওই তরুণী তাকে ছাড়তে চাননি বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করার পর তিনি ওই যুবকের পাইকপাড়ার বাড়ির ঠিকানা বার করেন। তারপর একদিন তার এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে সোজা চলে যান যুবকের বাড়ির ঠিকানায়। এদিকে ওই যৌনকর্মী তরুণীকে দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন ওই যুবক।

যুবকের এলাকার সকলের সামনে চিৎকার করে তরুণী বলেন, তার পেটে ওই যুবকের বাচ্চা রয়েছে। এখন ওই যুবক দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করছেন। তাই তার সাথে সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না। তাকে তার ভরণপোষণের জন্য ৫ লক্ষ টাকা দিতে হবে। এমনকি টাকা না দিলে তাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হবে অথবা খুন পর্যন্ত করে ফেলা হতে পারে বলে হুমকি দেন ওই তরুণীর বন্ধু। এরপর এই যুবক চিৎপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যুবকের দাবি, তিনি বাবা হতেই পারেন না, কারণ সঙ্গমের সময় তিনি কন্ডোম ব্যবহার করেছিলেন।

এদিকে পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত যুবকের অভিযোগের ভিত্তিতে তোলাবাজির অভিযোগ নেওয়া হলেও ওই তরুণী মেডিকেল টেস্টে যদি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় এবং প্রমাণ হয় তরুণীর পেটের ভ্রণের সঙ্গে ওই যুবকের কোনও সম্পর্ক রয়েছে, তাহলে ওই তরুণীও আইনি সহায়তা পাবেন। সেক্ষেত্রে ওই যুবকের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *