পুরুলিয়ায় তৃণমূলের রাজনীতিতে ব্রাত্য হতে চলেছেন শান্তিরাম? প্রশ্ন তৃণমূলের অন্দরে

সাথী দাস, পুরুলিয়া, ১০ আগস্ট: এখনও তিনি মন্ত্রী। একই সাথে সদ্য প্রকাশিত তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের তালিকাতেও তিনি জেলা চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন। তারপরও তৃণমূলের অন্দর থেকে প্রশ্ন উঠছে সদ্য প্রাক্তন জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো কি ব্রাত্য হয়ে যাচ্ছেন? সোমবার একটি দলীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে বেশি করে উঠেছে এই প্রশ্ন।

এদিন পুরুলিয়া শহরের স্টেশন পাড়ায় তৃণমূলের দলীয় দফতরে একটি যোগদান কর্মসূচি ছিল। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন বর্ষীয়ান নেতা বিষ্ণু মেহেতা। তাঁর হাতে তৃণমূলের দলীয় পতাকা তুলে দেন নবনিযুক্ত জেলা সভাপতি গুরুপদ টুডু। উপস্থিত ছিলেন সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র নবেন্দু মাহালি সহ জেলা নেতৃত্ব। লক্ষ্যনীয় ভাবে এই অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন শান্তিরাম মাহাতো। এই প্রসঙ্গে দলেরই একটি সূত্র থেকে জানা যায় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রনই জানানো হয়নি তাঁকে। অনুপস্থিতি নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে সভাধিপতি সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, করোনা আবহে সাবধানতা অবলম্বন করা হচ্ছে। শান্তিরামবাবু সব কিছুই জানেন কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে কিছুটা বয়সের কারণে দূরত্ব রাখছেন তিনি।

এদিন তৃণমূলে যোগদানকারী বিষ্ণু মেহেতা অতীতে তৃণমূলের সক্রিয় নেতা ছিলেন। পরবর্তী কালে তৎকালীন জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতোর সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর তিনি তৃণমূল ছেড়ে সরাসরি বিজেপিতে যোগ দেন। জেলা তৃণমূলের প্রবল সমালোচক হয়ে ওঠেন তিনি। শান্তিরামবাবুকে সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেবার পরই জেলা তৃণমূলের তরফ থেকে বিষ্ণু মেহেতাকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। এদিন দলে যোগ দিয়ে বিষ্ণুবাবু বলেন, পুরনো ঘরে ফিরে খুব ভাল লাগছে তাঁর। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর এলাকায় তৃণমূলকে জয়ী করার জন্য তিনি এখন থেকেই ঝাঁপিয়ে পড়বেন বলে জানান। বিজেপি সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে বলে দাবি করেন তিনি। একই সাথে কঠোর সমালোচনা করেন বেসরকারীকরণের।

তবে এই যোগদানের পর থেকেই তৃণমূলের অন্দরে শান্তিরাম মাহাতোর অনুপস্থিতি নিয়ে ব্যাপক গুঞ্জন শুরু হয়ে যায়। নিচুস্তরের কর্মীরা অনেকেই বলেন, এভাবে চললে নির্বাচনের আগে দলের বিভাজন রেখা অনেক স্পষ্ট হয়ে উঠবে। তাতে আখেরে লাভ হবে বিজেপির। অন্যদিকে,  বিষ্ণু মেহেতার তৃণমূলে যোগদান প্রসঙ্গটি হালকা ভাবে দেখাবার চেষ্টা করে বিজেপি। বিজেপি জেলা সভাপতি বিদ্যানগর চক্রবর্তী বলেন, ‘বহুদিন আগেই সক্রিয়তা হারিয়েছেন। তিনি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বিজেপির কোনও ক্ষতি হবে না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *