জে মাহাতো, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ৬ জুলাই: চলে গেলেন মানবিকগুণ ও প্রগতিশীল চিন্তাধারার সিদ্দিকা খান। শনিবার ভোররাতে গড়বেতার মংলাপোতা গ্রামে নিজ বাসভবনে প্রয়াত হন লেখিকা ও সমাজকর্মী রোশেনারা খানের মা সিদ্দিকা খান। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯০ বছর। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। ছুটে আসেন পাড়া, প্রতিবেশী ও আত্মীয়-স্বজনেররা।
সিদ্দিকা খান ১৯৩০ সালে কেশপুর ব্লকের অমৃতপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ছ’ভাই বোনের মধ্যে সিদ্দিকা ছিলেন বাবা-মায়ের পঞ্চম সন্তান। শৈশবেই মা হারানো সিদ্দিকাদের লালন-পালন করেছেন তাঁদের বড়দি রোকেয়া বেগম। সিদ্দিকা যখন ছোট তখন তাঁর বাবা খলিলুদ্দিনের ইচ্ছায় পুরো পরিবার মেদিনীপুর শহরে চলে আসে। সেই অস্থির সময়ে স্কুলে গিয়ে লেখাপড়া শেখা না হলেও সিদ্দিকা বাংলা, হিন্দি, উর্দু তিনটি ভাষাই বলতে ও বুঝতে পারতেন। এসব তিনি তাঁর পিতা ও দাদাদের কাছ থেকে শুনে শুনে শিখেছিলেন। সিদ্দিকা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন মতিউর রহমানের পুত্র বিপত্নীক হাবিবুর রহমানের সাথে। হাবিবুরের বাবা পুলিশ অফিসার মতিউর রহমানের আদি বাড়ি গড়বেতার মংলাপোতায় হলেও পিতার কর্মসূত্রে হাবিবুর বাড়ি বানিয়ে মেদিনীপুর শহরে থাকতেন।যুবক বয়সে হাবিবুর ছিলেন স্বাধীনচেতা সংস্কৃতিমনস্ক। স্কুলে লেখাপড়া না শিখলেও পরে ছেলে, মেয়েদের কাছ থেকে কাজ চালানোর মতো লেখা পড়া শিখে নিয়েছিলেন সিদ্দিকা। সিদ্দিকা শেষ বয়সে নিয়মিত খবরের কাগজ পড়তেন, ভালো সেলাইয়ের কাজ জানতেন। তাঁর কন্যা মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা রোশেনার খান বর্তমান সময়ের একজন বিশিষ্ট সমাজকর্মী ও লেখিকা। মুসলিম মহিলা সহ পিছিয়ে পড়া সমস্ত মহিলাদের নিয়ে রোশেনারার লেখালেখি ও লড়াইয়ের কথা সর্বজন বিদিত।