আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ১২ জুলাই : বাবা মায়ের উপর ছেলে বৌমার অত্যাচারের অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। কিন্তু ছেলে-বৌমার ওপরে বাবা-মায়ের অত্যাচারের ঘটনা খুব একটা শোনা যায় না। এই উল্টো ঘটনা ঘটল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথিতে। বেকার ছেলে ও বৌমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল সরকারি কর্মচারী বাবা ও স্কুল শিক্ষিকা মায়ের বিরুদ্ধে। আর তাই, বাঁচতে চাওয়ার আবেদন জানিয়ে দিঘা কলকাতা জাতীয় সড়কের ধারে পোষ্টার হাতে ধর্নায় বসল ছেলে-বৌমা।
বছর দুয়েক আগে বাবা-মায়ের মতামতকে অগ্রাহ্য করে প্রেমিকা সুমিতাকে বিয়ে করে মন্দারমণির সুপেরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মেহেবুব দাস। বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মেহেবুবের বাবা মায়ের সাথে মেহেবুবের স্ত্রী সুমিতার অশান্তি দেখা যায়। গন্ডগোল কখনও বৌমার পোষাক নিয়ে, গন্ডগোল কখনও বৌমার পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া নিয়ে। শেষমেষ মাস ছয়েক আগে ছেলে বৌমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন বাবা মা। তারপর কাঁথি শহরে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করে মেহেবুব ও সুমিতা।
এরপর মোটামুটি সবকিছু ঠিকঠাক চলছিল। টিউশন করে সংসার চলতো। সাথে দুজনের পড়াশোনা। বাধ সাধলো করোনা ভাইরাস। বন্ধ হল টিউশন। সমস্যায় পড়ল তরুণ-তরুণী। শ্বশুরবাড়ি থেকে পাওয়া গহনা আনতে গত ১ জুলাই মন্দারমণি থানা এলাকার শুবেড়িয়া গ্রামের বাড়িতে যায় মেহেবুব। মেহেবুব ও সুমিতার অভিযোগ, বাড়িতে গেলে তাদের বেধড়ক মারধর করে বাবা, মা ও বোন। গয়না ও জিনিসপত্র দেওয়া তো দূরের কথা, মেরে মেহেবুবের হাত ভেঙ্গে দেওয়া হয়। গত ১ জুলাই বাবা-মা’য়ের বিরুদ্ধে মন্দারমণি থানায় অভিযোগও দায়ের করে সুমিতা। তারপর ১১ দিন কেটে গেলেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই শেষমেশ বাঁচার আবেদন নিয়ে, বিয়ের গয়না ফেরতের আবেদন জানিয়ে হাতে লেখা পোস্টার নিয়ে কাঁথি শহরের দিঘা বাইপাসে কলকাতা-দিঘা ১১৬ বি জাতীয় সড়কের ধারে ধর্নায় বসে তরুণ-তরুণী। খবর পেয়ে তাদের বাবা-মায়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা শুরু করেছে কাঁথি থানার পুলিশ।
সরকারি কর্মচারী বাবা ও স্কুল শিক্ষিকা মায়ের বিরুদ্ধে ছেলে-বৌমার উপর অত্যাচারের খবর সামনে আসার পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে কাঁথিতে।