সাহায্য করেও প্রচার চান না, বড় মনের পরিচয় সোমেনের

চিন্ময় ভট্টাচার্য, আমাদের ভারত, ৩০ মার্চ: লকডাউন পরিস্থিতি দেশবাসীকে গৃহবন্দি করেছে। হাতেগোনা কিছু মানুষকে বাদ দিলে রাস্তাঘাট প্রায় শুনসান। জনগণ দুর্বিষহ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। তবে, এই ব্যাপারে তিনি প্রচার চান না। কারণ, আর্তের আত্মতৃপ্তিই তাঁর কাছে পুরস্কার। সোমবার এক বিবৃতি প্রকাশ করে এই কথা জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তাঁর দেখানো এই পথে চলার জন্য অন্যদেরও আহ্বান জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।

এই প্রসঙ্গে বিবৃতিতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘আর্তের সেবা করা প্রতিটি মানুষের জীবনের অঙ্গ। কিন্তু, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও সেই কারণে আমাদের দেশে সাহায্যপ্রার্থী হওয়া মানুষগুলো কখনও সেই তালিকায় ছিলেন না। মূলতঃ কেন্দ্রীয় সরকারের তুঘলকি শর্তে তারা সক্ষম থেকে সাময়িক অক্ষমে পরিণত হয়েছেন। আমরা অনেকে এই সমস্ত মানুষের পাশে নিজ নিজ ক্ষমতা এবং সামর্থ্য অনুসারে তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। শ্রীরামকৃষ্ণের কথায় জীবের সেবাই শিবের সেবা। কিন্তু, সে সেবা প্রচারের জন্য নয়। স্বামীজী বলেছেন, তোমার ডানহাত কী করছে সে কথা তোমার বামহাত যেন জানতে না-পারে। কেউ একজন, তো কেউ একশো বা হাজার জনের পাশে দাঁড়িয়ে বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলা করছেন। আবার সবটাই যে সকলে পারছেন, এমনটাও নয়। তবে চেষ্টাটা থাকতে হবে। সেই সঙ্গে মনের শুদ্ধতা বজায় রাখতে এইসব ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব প্রচার বিমুখ হতে হবে।

যারা প্রচার ছাড়া একপাও এগোতে পারেন না, প্রচারই যাদের জীবনের সব, আমি সেই দলে নেই। আমার সামান্য সাহায্য পেয়ে কেউ তুষ্ট হলে তার আত্মতৃপ্তিই আমার কাছে পুরস্কার ও আশীর্বাদ। আমরা জীবনে কেউ কখনও বর্তমান পরিস্থিতিতে পড়িনি বা পড়েননি। ভবিষ্যতে আবারও কখনও এই অবস্থা আসুক, এটাও আমরা কেউ চাই না। তাই সাময়িক বিপদে পড়া মানুষগুলোর কাজে লেগে সেসব কথা প্রচার করা সম্মান আদায়ের পরিবর্তে অসম্মানের হবে বলেই আমার বিশ্বাস। যে মানুষগুলো কোনওদিন কোনওরকম সাহায্য চাননি, আরও অনেক ক্ষমতাশালী মানুষ থাকা সত্ত্বেও বর্তমান এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে তাঁরা যে আমাদেরকে কাজে লাগার ও তাঁদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন, এজন্য তাঁদের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞ থাকা উচিৎ।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *