মোটা টাকা ঋণ নিয়ে ঘুষ দিয়ে হল না এসএসসি চাকরি, দাসপুরে হতাশায় বিষ খেলেন যুবক

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ৩ ডিসেম্বর: ঋণ নিয়ে ঘুষ দেওয়ার পরেও এসএসসি চাকরি না হওয়ায় হতাশায় বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হল এক যুবক। ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের। মৃত যুবকের নাম তপন দোলই(২৮)। ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়ে তার পরিবার।

জানা গেছে, বেসরকারি কয়েকটি সংস্থা থেকে চড়া সুদে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে এসএসসির চাকরির জন্য ঘুষ দিয়েছিলেন যুবক। কিন্তু চাকরি হয়নি, টাকা ফেরত চাইতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছিলেন। অন্যদিকে ছিল ঋণের টাকা ফেরানোর চাপ। ২০১৭ সাল থেকে কোনমতে সামলালেও বর্তমান পরিস্থিতিতে হতাশায় বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয় ওই যুবক।

দাসপুর থানার বুলুরি গ্রামের যুবক তপন দোলুই ইংরেজিতে এমএ ও বিএড করেছিল বলে পরিবারের দাবি। এই যুবক এসএসসিতে পরীক্ষা দেওয়ার পর চাকরির সুপারিশের জন্য মোটা টাকা দিয়েছিল কোন এক দালালকে। নিজের পরিবারের কাছে থাকা টাকা ছাড়াও বেশ কয়েকটি সংস্থা থেকে চড়া সুদে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছিল ওই দালালকে। চাকরি হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও চাকরি হয়নি। অন্যদিকে সুদে নেওয়া টাকার কিস্তি মেটাতে সমস্যা তৈরি হয়েছিল টিউশন পড়ানো যুবকের।

তপনের দাদা সুকুমার দলুই বলেন, “চড়া সুদে টাকা নিয়ে ভাই চাকরির জন্য দিয়েছিল। কাকে দিয়েছিল তার প্রকৃত ঠিকানা আমরাও জানি না। চাকরি হচ্ছে না দেখে টাকা ফেরত আনতে গিয়ে আক্রমণের মুখে পড়েছিল সেই দালালের। কোনক্রমে প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরেছিল। তারপর সেই টাকার সুদের কিস্তি মেটানো সম্ভব হয়নি। কারণ আমাদের অত রোজগার ছিল না, ভাই সামান্য টিউশন পড়াতো।এরপর সেই চাকরি কোনোভাবেই হবে না বলে বর্তমানে বুঝতে পারে। বৃহস্পতিবার রাতে তাই সবাই যখন ঘুমোতে যাচ্ছিলাম তখন সে বিষ খেয়ে নেয়। রাতেই তাকে উদ্ধার করে আমরা চিকিৎসার জন্য ভর্তি করি নার্সিংহোমে। সেখানেই শুক্রবার রাতে তার মৃত্যু হয়। এই পরিস্থিতিতে ঋণ শোধ করতে বীমার টাকাটা অন্তত যাতে পাওয়া যায় তার জন্য ডেথ সার্টিফিকেট নিতে হবে। সেই জন্য মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ নিয়ে এসেছিলাম আমরা। ভাইটাকে কোনভাবেই বাঁচাতে পারলাম না।”

মৃতের দাদা সুকুমার দোলুই বলেন, “আমরা এই ঘটনার কোথাও অভিযোগ করছি না। কারণ এই ধরনের অপরাধীদের ক্ষেত্রে পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেবে বলে আমাদের মনে হয় না।”

শনিবার ওই যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *