কোচবিহারে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা কমিটিতে নতুনদের উপরেই ভরসা রাখল রাজ্য নেতৃত্বে

ছবিঃ ( বাঁ দিক থেকে পার্থ প্রতিম রায়,বিনয়কৃষ্ণ বর্মন, উদয়ন গুহ)
আমাদের ভারত, কোচবিহার, ২৩ জুলাই: পুরনোদের প্রায় ছেঁটে ফেলে কোচবিহার জেলায় পরে তৃণমূল কংগ্রেসে আসা নেতাদেরই প্রাধান্য দিল দল। সারা রাজ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের সাংগঠনিক স্তরে ব্যাপক রদবদল হয়েছে। বাদ যায়নি কোচবিহার। জেলাতে তৃণমূলের নতুন সভাপতি হয়েছেন পার্থ প্রতিম রায়, বর্তমান জেলা সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যান পদ। জেলার দলের দুই কো-অর্ডিনেটর পদে নিয়ে আসা হয়েছে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ এবং মেখলিগঞ্জের বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধানকে। অন্যদিকে যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি করা হয়েছে অভিজিৎ দে ভৌমিককে। কোচবিহারের প্রবীণ নেতা তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে করা হয়েছে রাজ্য কমিটির সহ-সভাপতি।

রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা কোচবিহার জেলার পুরনো তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের একপ্রকার ছেঁটে ফেলে নতুন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করা নেতাদেরই স্থান দেওয়া হয়েছে জেলা কমিটিতে। পার্থ প্রতিম রায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেসে আসেন, সেটা অবশ্য তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগেই। কিছুদিনের জন্য উপ-নির্বাচনে জয়ী হয়ে তিনি কোচবিহারের সাংসদ নির্বাচিত হন, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঘোষের সাথে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় গত বছর লোকসভা নির্বাচনে সাংসদ পদে টিকিট দেয়নি দল। সবাই যখন ধরেই নিয়েছিল টিকিটের জন্য এবার পার্থপ্রতিম রায় বিজেপিতে যেতে পারেন, কিন্তু তিনি বিজেপিতে যাননি।

সূত্রের খবর, বিজেপি প্রার্থী হিসেবে তাকেই প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু তিনি রাজি হননি। দলের প্রতি এই আনুগত্যই পরবর্তীকালে তাকে জেলা কার্যকারী সভাপতি পদে অভিষিক্ত করে। অবশ্য কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি জেলা সভাপতি। অন্যদিকে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন বছর পাঁচেক আগে, মেখলিগঞ্জের বিধায়ক অর্ঘ্য রায় প্রধান’ও একসময় ছিলেন ফরওয়ার্ড ব্লকে। অন্যদিকে ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে আসা আরও এক নেতা হিতেন বর্মন স্থান পেয়েছেন রাজ্য সমন্বয় কমিটিতে। ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে তৃণমূলে আসা অন্য এক নেতা পরেশ অধিকারী রাজ্য কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসা অভিজিত দে ভৌমিককে যুব সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। কাজেই একগুচ্ছ অন্য দল থেকে আসা নেতাদের সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়ে দলের বেশ কিছু পুরনো নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ঠান্ডা ঘরে পাঠিয়ে দেওয়া হলো বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ’কেউ রাজ্য সহ-
সভাপতির মত কম গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে, তাকেও কিছুটা কোণঠাসা করা হল বলে মনে করা হচ্ছে। এই পুরনো নেতাদের ক্ষোভ সামাল দিয়ে আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে নবনিযুক্ত নেতৃত্ব কতটা সফলতা পায় সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *