“রাজ্যের পুলিশ বীরত্ব দেখাতে তরতাজা যুবকের প্রাণ নিল অথচ মুখ্যমন্ত্রীর বিবেক জাগ্রত হল না,” রাজবংশী যুবকের মর্মান্তিক পরিণতিতে কটাক্ষ অধীরের

স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ২৯ এপ্রিল: কালিয়াগঞ্জ কান্ডের জেরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা এলাকা৷ এরপর থানার একাংশে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা৷ যে ঘটনায় এক রাজবংশী যুবককে গুলি করে খুনের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে৷ প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘন্টার বনধ পালিত হয় উত্তরবঙ্গে। বনধেও বিক্ষিপ্ত গোলমালের ঘটনা ঘটে উত্তরবঙ্গের জেলায় জেলায়। এই পরিস্থিতিতে শনিবার কালিয়াগঞ্জ আসেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। এদিন কালিয়াগঞ্জে প্রথমে সাহেবঘাটা সংলগ্ন গাঙ্গুয়া এলাকায় মৃত কিশোরীর বাড়িতে যান। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তব বাগচী, জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।

মৃত ছাত্রীর পরিবারেরব সঙ্গে কথা বলে তাদের সান্ত্বনা দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। পাশাপাশি সমাধিস্থলে গিয়ে ফুল দিয়ে মৃত কিশোরীর আত্মার শান্তি কামন করেন। এরপর তিনি চলে যান রাধিকাপুরে। সেখানে চাঁদগাও গ্রামের নিহত যুবক মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন৷ কিভাবে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটল তা তাদের মুখ থেকে শোনেন অধীরবাবু৷ পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, স্কুল ছাত্রীর মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে পুলিশের ওপর আস্থা নেই তার পরিবারের। তাই ঘটনার সিবিআই তদন্ত হোক। এব্যাপারে পরিবারকে যথাযথ সহায়তা দলের তরফ থেকে করা হবে।

অন্যদিকে দুর্নীতি মামলা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরিয়ে দেওয়ার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেন, তৃণমূল যে দুর্নীতিগ্রস্ত তা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রমাণ করে দিয়েছেন।তিনি হলেন বাংলার বঞ্চিত, নিপীড়িত মানুষের প্রাণভ্রমরা। অপরদিকে এদিন কয়লা পাচার নিয়েও তৃণমূলকে আক্রমণ করেন অধীর চৌধুরী৷ তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এটা সংগঠিত অপরাধ। কয়লা থেকে গরু কোনো কিছুই বাদ নেই৷

অন্যদিকে কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুরে পুলিশের গুলিতে যে রাজবংশী যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে এবার মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করলেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, সীমান্তবর্তী একটা গ্রাম। এই গ্রামে না অশান্তি আছে না কোনো মারামারি। হিংসা, হানাহানি নেই আপাতশান্ত এই গ্রাম। অথচ রাজ্যের পুলিশ নিজেদের বীরত্ব, বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে একটা তরতাজা যুবককে গুলি করে হত্যা করে দিল। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে মা মাটি মানুষের নেত্রী বলে দাবি করেন, অথচ তার বিবেক জাগ্রত হল না। এখনও কেন তিনি সেই পুলিশ কর্মীর নাম বলতে পারলেন না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। পুলিশের এত বাহাদুরি ও নিষ্ঠুরতা দেখানোর কি প্রয়োজন ছিল তা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন অধীরবাবু।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *