সুকান্ত মজুমদার বিদ্যাসাগরের জন্মভিটেতে যাওয়ায়, গঙ্গাজল দিয়ে পরিষ্কার করল তৃণমূল

পার্থ খাঁড়া, মেদিনীপুর, ৩০ সেপ্টেম্বর: বীরসিংহ গ্রামে গিয়ে ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তাই রাজ্যের মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার উপস্থিতিতে বিধায়কের নির্দেশে গোটা এলাকা গঙ্গাজল দিয়ে পরিষ্কার করল তৃণমূল কর্মীরা। এমনকী বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে সুকান্ত মজুমদার যে মালা দিয়েছিলেন সেটিও খুলে ফেলা হয়। এই ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছেন, মজুমদার। আর তৃণমূলের এই কাজের বিচারের ভার রাজ্যের মানুষের উপর ছেড়ে দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে দাসপুরে একটি আশ্রমের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সেই কর্মসূচি সেরে বীরসিংহ গ্রামে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। বিজেপির দাবি, পুলিশের অনুমতি পেতে বিকেল হয়ে যায়, তাই বিকেলের পরে বীরসিংহ গ্রামে গিয়ে ছোট্ট একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিদ্যাসাগরের জন্ম দিবস পালন করে বিজেপি। বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সুকান্ত মজুমদার। পাশের স্কুলেও যান, সেখানেও বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দেন তিনি।

ছবি: মালা খুলে ফেলা হচ্ছে।

বিদ্যাসাগরের জন্মভিটা থেকে কয়েকশো মিটার দূরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিদ্যাসাগরের জন্ম দিবস পালন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সুকান্ত মজুমদার বেরিয়ে যাওয়ার পরেই প্রশাসনিক অনুষ্ঠান থেকে বিদ্যাসাগরের জন্মভিটাতে হাজির হন মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া ও বিধায়ক অজিত মাইতি। বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মালা দেওয়ার পর অজিত মাইতি কর্মীদের নির্দেশ দেন পুরো জন্মভিটা সংলগ্ন এলাকা যেন গঙ্গাজল দিয়ে পবিত্র করা হয়। মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার উপস্থিতিতেই অজিত মাইতি এই নির্দেশ দেন।

ছবি: গঙ্গাজল দিয়ে পরিস্কার করা হচ্ছে।

অজিত মাইতির দাবি, “ওরাই বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙ্গেছিল। সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে এখানে এসেছে। ওরা মেকি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিল। তাই এই এলাকার শুদ্ধিকরণের জন্য কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছি পুরো এলাকা গঙ্গা জল দিয়ে শুদ্ধিকরণ করবে ওরা।”

অজিত মাইতি ও মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বেরিয়ে যাওয়ার পরেই এলাকার কর্মীরা বিদ্যাসাগরের জন্ম ভিটা চত্বর গঙ্গাজল ছড়িয়ে শুদ্ধ করে। একইসঙ্গে বিজেপির পক্ষ থেকে যে সমস্ত মালা দেওয়া হয়েছিল বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে তা খুলে সরিয়ে দিয়ে গঙ্গা জল দিয়ে ধোয়ানো হয়। পাশের স্কুলের মূর্তিও একই ভাবে পরিষ্কার করে তৃণমূল কর্মীরা।

এব্যাপারে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বিভিন্ন রূপে চিনি। তবে, তিনি মূলত একজন শিক্ষক ছিলেন। সেই স্বনামধন্য শিক্ষককে একজন অধ্যাপক মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানালে অপবিত্র হয়ে যাবেন? আর চোরেরা শ্রদ্ধা জানালে পবিত্র হবেন তিনি?” সুকান্তবাবু কড়া হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বাংলার মানুষ একদিন এই হিসাব বুঝে নেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *