মুসলিম প্রতিনিধি দলের আর্জি শুনতে রাজি হলেও জ্ঞানবাপী মসজিদে ভিডিওগ্রাফি চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের

আমাদের ভারত, ১৩ মে: সম্প্রতি জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে একটি সমীক্ষা চালানো ও ভিডিওগ্রাফি করার নির্দেশ দিয়েছে বারানসি আদালত। এই নির্দেশের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় মুসলিমদের একটি প্রতিনিধি দল। শুক্রবার জ্ঞানবাপী মসজিদ নিয়ে মুসলিম প্রতিনিধি দলের আবেদন শুনতে রাজি হয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু জ্ঞানবাপী মসজিদের ভিতরে হওয়া ভিডিওগ্রাফি স্থগিত করার নির্দেশ দেয়নি দেশের শীর্ষ আদালত। এদিকে জ্ঞানবাপী মসজিদ ইস্যুতে মুখ খুলেছেন এআইএমআইএম দলের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েসি। তিনি বলেছেন, বাবরি মসজিদ আমরা হারিয়েছি আর কোনো মসজিদ হারাতে চাই না।

সম্প্রতি বারানসি জেলা আদালতের দেওয়া নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশন দায়ের করা হয়। বারানসি জেলা আদালত একজন অ্যাডভোকেট কমিশনারকে কাশী বিশ্বনাথ মন্দির লাগোয়া জ্ঞানবাপী মসজিদে ভিডিও সমীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এরপরই আঞ্জুমান ইন্তেজামিয়া মসজিদ, জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটি এর বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। প্রধান বিচারপতি এন ভি রমান্নার কাছে মামলাকারীদের হয়ে সিনিয়ার আইনজীবী হুজেফা আহমাদি সমীক্ষার বিষয়ে স্থগিতাদেশ চেয়েছেন। প্রধান বিচারপতি বলেছেন এই মামলা সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই আমাকে কাগজপত্র দেখতে দিন আমরা এটিকে তালিকাভুক্ত করব।

বৃহস্পতিবার বারানসি জেলা আদালত ভিডিও সমীক্ষা পরিচালনার জন্য নিযুক্ত অ্যাডভোকেট কমিশনারকে প্রতিস্থাপন করার জন্য মসজিদ কমিটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছিল। আদালত অবশ্য মসজিদে জরিপ চালাতে অ্যাডভোকেট কমিশনারকে সহায়তা করার জন্য আরও দুই আইনজীবীকেও নিয়োগ করেছে।

গতবছর জ্ঞানবাপী মসজিদের দেওয়ালের বাইরে হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি পূজার অনুমতি চেয়ে বারানসি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন দিল্লির পাঁচ মহিলা। তাদের আবেদনের ভিত্তিতে সম্প্রতি জ্ঞানব্যাপী মসজিদে ভিডিওগ্রাফি সমীক্ষার নির্দেশ দেয় আদালত। প্রসঙ্গত, প্রতিদিন হিন্দু দেব দেবীর পুজো করতে চাওয়া জ্ঞানবাপী মসজিদের এই অংশটি বর্তমানে বছরে একবার নামাজের জন্য খোলা হয়। ১৮ এপ্রিল ২০২১-এ মহিলারা আদালতে আবেদন করেছিলেন মসজিদের দেওয়ালে থাকা প্রতিমাগুলির যেনো কোনও ক্ষতি না হয়।

এদিকে মিম প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বৃহস্পতিবার জ্ঞানব্যাপী মসজিদ নিয়ে এই রায়কে উপাসনা স্থল আইন ১৯৯১ এর লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এই আইন অনুসারে কোনো ব্যক্তি কোনও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের উপাসনালয় ও তার কোনো অংশকে একই ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিভিন্ন অংশের ভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায় বা তার কোনো বিভাগের উপাসনালয়ে রূপান্তর করতে পারবে না। মিম প্রধান দাবি করেছেন, বারানসি আদালতের নির্দেশ উপাসনা স্থল ১৯৯১ আইন স্পষ্টভাবেই লঙ্ঘন করা হয়েছে। তার দাবি, এটি বাবরি মসজিদ শিরোনাম বিতর্কে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়কেও লঙ্ঘন করে। ওয়েসি বলেছেন, বাবরি মসজিদের পর আরও একটি মসজিদ হারাতে চান না। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আশা করি অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ড এবং মসজিদ কমিটির সুপ্রিমকোর্টে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *