ঝাঁঝ নেই প্রতিবাদে! বিশ্বভারতীতে প্রতীকি সভা, জলকামানের নিরাপত্তায় চলছে প্রাচীর তৈরি

আশিস মণ্ডল, বোলপুর, ২৯ সেপ্টেম্বর: মাস দেড়েক আগে বিশ্বভারতীর প্রাচীর ভাঙ্গতে যে পুলিশ ছিল নিষ্ক্রিয়, হাইকোর্টের ধাক্কায় সেই পুলিশই এবার জল কামান নামিয়ে প্রাচীর তৈরিতে সহযোগিতা করছে। ঝাঁঝ নেই প্রাচীর বিরোধী মেলার মাঠ বাঁচাও কমিটিরও। সেই দিন যারা শান্তিনিকেতন থানার সামনে ঘণ্টাখানেকের বেশি সময় ধরে তাণ্ডব চালিয়েছিল তারাই এখন বাউল গানের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধ করতে পৌষ মেলার মাঠ প্রাচীরে দিয়ে ঘিরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। সেই মতো ১৫ আগস্ট থেকে কাজ শুরু করে। একদিন কাজ চলার পর ১৭ আগস্ট সকালে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলার মাঠ বাঁচাও কমিটির নামে মিছিল করে সহস্রাধিক বহিরাগত লোকজন। সেই মিছিলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৃণমূলের দুবরাজপুর বিধায়ক নরেশ বাউরি, বোলপুর পুরসভার সদস্য শেখ ওমর সহ বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী সমর্থক। মিছিল মেলার মাঠের কাছে পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় তাণ্ডব। চলে ধ্বংসলীলা। ভেঙ্গে ফেলা হয় মেলা মাঠের প্রাচীন গেট, অস্থায়ী অফিস ঘর। লুঠপাট করা হয় সিমেন্ট ও প্রাচীর তৈরির যন্ত্রাংশ।

ছবি: জলকামান।
তবে সে সময় কোনও পুলিশ কর্মীকে দেখা যায়নি। এরপরেই এনিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় হাইকোর্ট চার সদস্যের কমিটি গঠন করে দেয়। সেই কমিটির নির্দেশে সোমবার থেকে শুরু হয়েছে প্রাচীর তৈরির কাজ। রাজ্য পুলিশের নিরাপত্তায় কাজ শুরুর নির্দেশ দেন আদালতের চার সদস্যের কমিটি। এদিকে আজ সকাল থেকে বোলপুরের সুপার মার্কেটের সামনে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা মাঠ বাঁচাও কমিটি ঝাঁঝ কমিয়ে বাউলের মাধ্যমে প্রাচীরের প্রতিবাদ জানান। ফের তাণ্ডব চলতে পারে আশঙ্কায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সোমবার প্রশাসনের সর্বত্র ১৪৪ ধারা জারির আবেদন জানান। ফলে সকাল থেকে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। নামানো হয়েছিল জল কামান। তবে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই বেলা সাড়ে ১১ নাগাদ প্রতিবাদ সভা শেষ করে কমিটি। ব্যবসায়ী আমিনুর হোদা বলেন, “আমরা প্রতীকী প্রতিবাদ সভা করলাম। কবিগুরু চেয়েছিলেন খোলামেলা পরিবেশ। সেই আদর্শের আমরা শান্তিপূর্ণ প্রতীকী সভা করলাম। ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ভাবার জন্য আবেদন জানাচ্ছি”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *