নার্সদের সাথে অশ্লীল ব্যবহার, নগ্ন হয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঘোরার অভিযোগ তবলিগ ফেরতদের বিরুদ্ধে

আমাদের ভারত, ৩ এপ্রিল: করোনা সতর্কর্তা উপেক্ষা করে সামিল হয়েছিলেন বড়সড় ধর্মীয় জমায়েতে এটা ছিল প্রথম অভিযোগ। এবার তাদের বিভিন্ন কোনা থেকে খুঁজে বার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তারা শুরু করেছেন একেবারে অশ্লীল ব্যবহার। উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের হাসপাতলে নাকি নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাবলিগি জামাতের সদস্যরা। অভব্য অশ্লীল আচরণ করছেন তারা কর্মরত নার্সদের সঙ্গে। পুলিশের কাছে এমনই অভিযোগ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতি দেখে তাবলিঘি ফেরতদের যেখানে যেখানে কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে সেখানে সেখানে উত্তর প্রদেশের সরকার পুলিশ মোতায়েন করেছে। একইসঙ্গে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইন প্রয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মার্চের ১৩ থেকে ১৫ পর্যন্ত দিল্লির নিজামুদ্দিনের তাবলিগি জামাতের ধর্মীয় সমাবেশ হয়। এই ধর্মীয় সভা-সমাবেশই আজ ভারতবাসীর কাছে করোনা আতঙ্কের অন্যতম কারণ। সমাবেশ থেকে ফিরে যারা বিভিন্ন রাজ্যে গিয়েছেন তাদের মধ্যে অনেকেরই করোনার উপসর্গ দেখা গেছে। অনেকে ইতিমধ্যে আক্রান্তও ৭ জনের মৃত্যুও হয়েছে। তাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফেরত আসা তাবলিগিদের বিভিন্ন জায়গা থেকে খুঁজে বার করে কোয়ারেন্টাইন করছে রাজ্য সরকার গুলি। এদিকে অজিত দলের নেতৃত্বে রীতিমতো অভিযান চালিয়ে খালি করা হয়েছে নিজামুদ্দিনের মারকাজ।

কেন্দ্র সরকারের নির্দেশ পেয়েই উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে ১৩৬ জন তাবলিগ ফেরতদের চিহ্নিত করে প্রশাসন। তাদের মধ্যে ৬ জনের করোনা উপসর্গ দেখা গেছে। ফলে তাদের গাজিয়াবাদের এম এম জি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তিরা অত্যন্ত অভব্য আচরণ করছেন এবং চিকিৎসায় চুড়ান্ত অসহযোগিতা করছেন। ফলে হাসপাতালের তরফে তাদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে লেখা আছে, তাবলিগিরা জামাকাপড় পড়ছেন না, নগ্ন অবস্থায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নার্সদের দেখলেই অশালীন মন্তব্য করছেন। স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছ থেকে বিড়ি, সিগারেট চাইছেন।

৩১ মার্চ হাসপাতালে তাদের ভর্তি করা হয়েছে। প্রথম থেকেই তারা অসহযোগিতা করে আসছেন। এমনকি হাসপাতালের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্র সিংহ তাদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তাতে কোন কাজ হয়নি। বরং নার্সের সঙ্গে অশ্লীল আচরণ করে নিজেদের অপরাধ আরো খানিকটা বাড়িয়েছেন তারা। তাদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তারা এমন আচরণ করছেন যাতে নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে যায়।

উল্লেখ্য,এর আগেও তাবলিঘি ফেরতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা স্বাস্থ্যকর্মীদের গায়ে থুতু ছেটাচ্ছেন। এবার হাসপাতালে নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়ানো এবং নার্সের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ উঠল। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বলেছেন, “ওরা আইন-শৃঙ্খলা মানবে না।ওরা মানবতার শত্রু। মহিলা স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে ওরা যা করছে তার জঘন্য অপরাধ।” যোগী প্রশাসন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এনএসএ প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। এই আইন অনুযায়ী এক বছর পর্যন্ত বিনা বিচারে আটকে রাখা যায়। একইসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শুধু তাবলিঘি ফেরতের বিরুদ্ধেই নয়, লকডাউন চলাকালীন পুলিশ ও স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে যারাই আক্রমণ করবেন তাদের বিরুদ্ধে এই একই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *