আমাদের ভারত, ২৪ জানুয়ারি:নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে নিয়ে তৈরি প্রস্তাবিত ট্যাবলো প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। সোমবার মামলার শুনানি ছিল। শুনানিতে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর ট্যাবলো বাতিলের কারণ যুক্তি দিয়ে তুলে ধরেন।
অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল জানিয়েছেন, নেতাজীর তৈরি আজাদ হিন্দ ফৌজ নৌ বিদ্রোহের সময় ভারতীয় সেনার সঙ্গে যোগ দিয়েছিল। সে সময় নিহত সেনাদের প্রতী শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে একটি ট্যাবলো তৈরি হয়েছে। সেই জন্যই আলাদা আলাদা করে ট্যাবলো হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে এত কম সময়ের মধ্যে আদালত পদক্ষেপ করতে পারবে না বলেও মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে নেতাজীর ট্যাবলো বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তাতে কেন্দ্র নিজের সিদ্ধান্ত বদল করেনি।
এরপর গত বৃহস্পতিবার আইনজীবী রমাপ্রসাদ সরকার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার শুনানি হয়েছে সোমবার।
শুনানির সময় রমাপ্রসাদ আদালতে সওয়াল করেন কোন পরিস্থিতিতে নেতাজীর ট্যাবলো বাতিল হল? কেনো শুধু নেতাজির ট্যাবলোই বাদ দেওয়া হল? তখন প্রধান বিচারপতি বলেন এত দেরি করে কেন এলেন? এত কম সময়ের মধ্যে আদালত কি করতে পারবে তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিচারপতি।
এরপরই কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটরজানিয়ে দেন, কেন্দ্র নেতাজির বিষয়ে যথেষ্ট সজাগ। তিনি জানান ২০১৫ সালে কেন্দ্রীয় সরকার নেতাজী সংক্রান্ত ফাইল প্রকাশের কাজ শুরু করে। একইসঙ্গে তিনি জানান সারাদেশ নেতাজীকে নিয়ে গর্ব করে। তিনি আমাদের আইকন। তাই তার হলোগ্রাম বসানো হয়েছে। আগস্টে মূর্তিও বসানো হবে। এটা মনে রাখতে হবে নেতাজি শুধু বাংলার নয় সারা ভারতের। ট্যাবলো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সব কিছুর একটা নিয়ম আছে। ১৯৪৬ সালে নৌবিদ্রোহের সময় ভারতীয় সেনার সঙ্গে আইএনএ যুক্ত ছিল। সে সময় বহু সেনা নিহত হয়। তাদের মধ্যে আইএনএ-র সেনারাও ছিল। তাদের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করে একটি ট্যাবলেট তৈরি হয়েছে। সেই জন্য আলাদা করে ওই ট্যাবলো রাখা হয়নি। মামলা শুনানির পর কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, একদিন পরেই প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান। এরমধ্যে পদক্ষেপ করা আদালতের পক্ষে সম্ভব নয়, সেইজন্যেই মামলা খারিজ করে দেওয়া হচ্ছে। মামলাটি দায়ের হতে অনেকটা দেরি হয়েছে।