ফের বন্ধ হতে চলেছে তারাপীঠ মন্দির

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৩ আগস্ট: করোনা ভাইরাসের কারনে এবার তারাপীঠের কৌষিকী অমাবস্যায় মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সোমবার দুপুরে রামপুরহাট মহকুমা শাসকের সভাকক্ষে সর্বসম্মতভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কথিত আছে, মহিষাসুর বধের পর শুম্ভ-নিশুম্ভের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন স্বর্গের দেবতারা। শেষে দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন। সেই তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী নিজ কোষ থেকে উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত করে এক পরমাসুন্দরী দেবী মূর্তিতে আবির্ভূত হন। নিজ কোষ শরীর থেকে বের হওয়ার জন্য তিনি হলেন কৌশিকী। কৌশিকীদেবী আবার তারা ও কালীতে রূপান্তরিত হন। আবার শোনা যায়, কৌশিকী অমাবস্যার দিন তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেতশীমূল বৃক্ষের তলায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ফলে ওই দিন মা তারার পুজো দিলে এবং দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয় এবং কুম্ভস্নান করা হয়। এই বিশ্বাসে আজও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ওই দিনটিতে তারাপীঠে ছুটে আসেন। কিন্তু করোনা আবহে এবার সেই পুণ্যলাভ হবে না পুন্যার্থীদের।

এদিন রামপুরহাট মহকুমা শাসকের সভাকক্ষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূম জেলা পরিষদের মেন্টর অভিজিৎ সিংহ, বোলপুর সাংসদ অসিত মাল, জেলা শাসক মৌমিতা গোদারা, তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান সুকুমার মুখোপাধ্যায়, তারাপীঠ মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায়। এবার ১৮ আগস্ট অমাবস্যা শুরু হচ্ছে। ছাড়ছে পরের দিন। ফলে ১২ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট পর্যন্ত তারাপীঠ মন্দির বন্ধ রাখা হবে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। তারাময় মুখোপাধ্যায় বলেন, “কৌষিকী অমাবস্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়। ফলে এই মহামারীর সময় কৌষিকী অমাবস্যায় মন্দির খোলা থাকলে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারনে মন্দির বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে রীতি মেনে মায়ের পুজো হবে। তবে পুন্যার্থীরা চাইলে তাদের নামে পুজো করা হবে। তবে মায়ের দর্শন হবে না”। শুধু মন্দির বন্ধই নয়, ওই সময় কোনও হোটেল বুকিং নিতে পারবে না। বিষয়টি বেশ কয়েকটি রাজ্যকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *