
আমাদের ভারত, ২৪ জানুয়ারি: বাংলাদেশের হাইকোর্টে মায়ের পরিচয়ের স্বীকৃতিতে ফেসবুকে লিখলেন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। তাঁর বিতর্ক তৈরি করা মন্তব্য রীতিমত ভাইরাল হয়ে উঠেছে।
তিনি লিখেছেন, “এক সময়, সেই তিরিশ চল্লিশ বছর আগে যেসব কথা বলে বাংলাদেশে গালি খেয়েছি, ঢিল খেয়েছি, মার খেয়েছি, হুমকি পেয়েছি, ঘৃণা পেয়েছি, ফতোয়া পেয়েছি, সেসব এখন ধীরে ধীরে মানা হচ্ছে।
বাংলাদেশের হাইকোর্ট আজ রায় দিয়েছেন ‘পিতৃ পরিচয়হীন সন্তানের অভিভাবক হতে পারবেন মা।’ শিক্ষা-সহ প্রয়োজনীয় যে কোনো ফর্ম পূরণের ক্ষেত্রেও মাকে অভিভাবক রাখার নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতদিন অভিভাবকের ক্ষেত্রে কেবলমাত্র বাবার নাম দেওয়ার সুযোগ ছিল।
আজ কেউ হাইকোর্টকে হেনস্থা করবে না, যেভাবে আমাকে করেছিল। কেউ কেউ নিজের জীবনের অসুবিধে করে অন্যের জীবনের সুবিধের জন্য কিছু করে যায়। আমার একার দেখা স্বপ্নগুলো বাংলাদেশে একটু একটু পূরণ হবে। আমি যে ব্রাত্য ছিলাম, ব্রাত্যই রয়ে যাবো।
আমাকে ব্রাত্য করেও যদি নারী স্বাধীনতার নিশান ওড়ে বাংলাদেশে, আমার চেয়ে সুখী কেউ হবে না।”
মঙ্গলবার এই পোস্ট করার ৪৫ মিনিট পর, বেলা পৌনে তিনটেয় লাইক, মন্তব্য ও শেয়ার হয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার ২০০, ১ হাজার ৩০০ ও ৬৩।
অধ্যাপক রোহিনী ধর্মপাল লিখেছেন, “আপনার লড়াই সত্যিই স্মরণীয়। আপনি এখনও লড়ছেন। যারা হাসছে, তারা যে কোনও ধরণের প্রগতিশীলতায় হাসে। চিরকালই। ছিল আছে থাকবে। আপনার মতো, আমাদের মতো মানুষও চিরকাল ছিল আছে থাকবে এবং বাড়বে।
বিশ্বনাথ দত্ত লিখেছেন, “সময়ের থেকে এগিয়ে আছেন আপনি দিদি। মোল্লারা সেটা বুঝতে পারবে না। ওরা এখনো মধ্যযুগে। ফারহানা হক লিখেছেন, “ব্রাত্য যে ছিলেন না তা আস্তে আস্তে প্রমাণিত হবে একদিন। অভিনন্দন জানাই আপনার দূরদৃষ্টিকে।”
সুদীপ্তা প্রামাণিক লিখেছেন, “তসলিমা নাসরিনের নাম ইতিহাসের বুকে খোদাই করে লেখা হয়ে গেছে। মানুষের জন্য, মেয়েদের জন্য তসলিমা নাসরিন লিখে যাবেন চিরকাল। ভালবাসা অনেক।” আলভিন রাহিম লিখেছেন, “এমন সময় আসবে, এই বঙ্গবাসীরাই আপনাকে নিয়ে গর্ব করবে যে, আমাদের একজন তসলিমা নাসরিন ছিলেন।”
অন্যদিকে, আবরার মোস্তাফা লিখেছেন, “ছিছি, বলার মত ভাষা নেই! এটা যথেষ্ট, বিভিন্ন পোস্টে কমেন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। আপনি একজন নির্লজ্জ বেহায়া মহিলা।” মহম্মদ আশরাফ আলি খান লিখেছেন, “যেমন আপনি তেমন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের হাইকোর্ট।”
ওয়ালিউল সাকিন লিখেছেন, “নিজে পুরো মারা খেয়ে জাতির পুরো মারা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করার নামই তসলিমা নাসরিন। যার কাছে নারী স্বাধীনতা মানেই অবাধ যৌনাচার।” মহম্মদ ইব্রাহিম খলিল লিখেছেন, “তুই তো হাজারো পুরুষের সঙ্গী ছিলি একটাও জম্ম দিলি না কেন?”
ইয়াসের আরাফাত নইম লিখেছেন, “কী বলবো, ভাষা খুঁজে পাই না। কিছু বললে ফেসবুক কমিটি গাইড লাইনের বাইরে চলে যায়। তাই বললাম না। আল্লাহ হেদায়েত দাও না হয় একবারে নিয়ে যাও।”
মহম্মদ রিয়াদ রহমান লিখেছেন, “পঙ্গু হয়েও লেকচার বন্ধ হলো না! নাস্তিক শয়তান বেটি।”