অশোক সেনগুপ্ত, আমাদের ভারত, ২১ সেপ্টেম্বর: বাংলাদেশে ফের দুর্গামূর্তি ভাঙ্গার ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে তোপ দেগেছেন প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায়। পোস্ট করার ১৪ ঘন্টা বাদে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এর লাইক, মন্তব্য ও শেয়ার হয়েছে যথাক্রমে ৫৪১, ১৬১ ও ৪৫।
তথাগতবাবু লিখেছেন, “বাংলাদেশে দুর্গা পূজা শুরু হয়ে গেল! বাংলাদেশে শারদীয়া দুর্গা প্রতিমা ভাঙ্গচুর উৎসব শুরু ফরিদপুর দিয়ে| যতদিন পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের না চৈতন্য হবে যে বাংলাদেশের হিন্দুরা তাদের নিকটতম আত্মীয় এবং এই ব্যাপারে তাদের সোচ্চার হওয়া উচিত, ততদিন এই-ই চলতে থাকবে।”
মৃনাল মুখার্জি লিখেছেন, “ওরা বরাবর আমাদের সাথে বেইমানি করেছে। অত্যাচার করে কোটি কোটি হিন্দুদের পশ্চিমবাংলায় ফেরত পাঠিয়েছে। হিন্দুদের সম্পত্তি লুট করেছে। এখনও বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছে। ওরা ভুলে গেছে ১৯৭১এর কথা। এসব দেখেও ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকার নীরব দর্শক হয়ে আছে।”
সুরজিৎ নাগ লিখেছেন, “দুর্গাপুজা যেখানেই হোক না কেন, দুর্গাপূজার মূর্তি ভাঙ্গার অর্থ কিন্তু পরিষ্কার, হিন্দুদের ভক্তি ও শ্রদ্ধাশীল বিশ্বাসের অবমাননা ও অপমান করা। সুযোগ পেলে যে কোনও স্থানে এই ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে সেটাকেই জানান দেওয়া। কোনও সময় আবার বুঝতে সক্ষম হবে কিছু ছেকু মাকু পরিহিত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ তারা যে বড়ো বড়ো জ্ঞানের আখড়া ছুটিয়ে থাকে তাদের কী এই সামান্য জ্ঞান অর্জন হয়নি।“
বেদপ্রকাশ শ্যামরায় লিখেছেন, “পশ্চিমবঙ্গের তুতো সেকুলারিস্ট ভাইবোনদের কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।” শশবিন্দু দে লিখেছেন, “ইসলাম, ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার কয়েকটি স্তম্ভ আছে, একটি স্তম্ভ হলো মন্দির ভাঙ্গচুর, ইসলাম যদি মন্দির ভাঙ্গচুর না করে তবে ইসলাম ইসলামই হতে পারবে না অতএব ওদের ধর্ম যাতে মান্যতা পায় তার জন্যে মন্দির ভাঙ্গচুরকে নিয়ে মনোকষ্টে ভুগে লাভ নেই।”
দেবজ্যোতি দে লিখেছেন, “হিন্দু বাঙালির আবার ঐসব বোধ আছে নাকি?” বাংলাদেশ থেকে সন্ময় ব্যানার্জি লিখেছেন, “গত ১৪ই সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান দুর্গা পূজার মণ্ডপ না বাড়ানোর জন্য বলেছেন। তার ৫ দিনের মধ্যেই দুর্গা প্রতিমা ভাঙ্গচুর শুরু হয়ে গেছে।” দীপ রায় লিখেছেন, “গত ১৮ সেপ্টেম্বর সোমবার রাত থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার ভোররাতের কোনও এক সময় ফরিদপুর সদর উপজেলার কৈজুরী ইউনিয়নের তাম্বুলখানা বাজারের সর্বজনীন দুর্গা মন্দিরের প্রতিমা রাতের আধারে ভাঙ্গচুর করেছে।”
রঙ্গন নিয়োগী লিখেছেন, “আপনাকে শ্রদ্ধা করি কিন্তু এই রকম গুজব রটাবেন না আমি বাংলাদেশে বছরে খুব কম হলেও ৪-৫ বছর যাই। ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে কখনো গেছেন , খুব কম করে ২৫ টা সরস্বতী পুজা হয় তাতে সব ধর্মের সবাই সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন । রামনা কালি বাড়িতে কখনো গেছেন? একবার আমার সঙ্গে চলুন, দেখে আসবেন । আমি খরচ করে আপনাকে নিয়ে যাবো।”
পাল্টা তথাগতবাবু লিখেছেন, “বিশেষ করে রঙ্গন নিয়োগীর উদ্দেশ্যে। ঢাকা দেশের রাজধানী, কসমোপলিটান জায়গা, তাই সেখানে এই ধরণের নষ্টামী না হবারই কথা। তা সত্ত্বেও আর্টিসান হত্যাকান্ড হয়েছিল। এগুলো সাধারণত প্রত্যন্ত অঞ্চলে হয়, যেখানে হিন্দুরা কোনঠাসা এবং মোল্লাতন্ত্রের আধিপত্য আছে। ইদানীং পাবনা, দিনাজপুর ইত্যাদি উত্তরবঙ্গের অঞ্চলে একটু বেশি হচ্ছে। বাংলাদেশে আমি বহুবার গেছি, আমার পূর্বপুরুষের বাসস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে খুলনা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলটা ঘুরেছি এবং বহু মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। এগুলো মোটেই গুজব নয়।”