
আমাদের ভারত, বনগাঁ, ১৫ মার্চ: করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বন্ধ হতে চলেছে মতুয়াদের ঐতিহ্যাশালী বারুনী মেলা। তবে এর পাশাপাশি ক্ষমতার দ্বন্দ্বও রয়েছে বলে মতুয়াদের এক অংশের দাবি। ইতিমধ্যে করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে রাজ্যের স্কুল, কলেজ, শপিংমল সহ বিভিন্ন সীমান্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। এমনকি পাঁচ মিটার দূর থেকে কথা বলতে চিকিৎসকরা জানিয়েছে। জমায়েত থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। এই সময় মেলা করা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বারুনী মেলা মতুয়াদের একটি ঐতিহ্যশালী মেলা।
প্রতিবছর মধূকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে মতুয়া ধর্ম গুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্ম তিথিতে উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগর ঠাকুর বাড়িতে কামনা সাগরে পুণ্যস্নান হয়। সেই উপলক্ষে আট দিন ধরে এই মেলা চলে। মেলাকে কেন্দ্র করে রাজ্য ও রাজ্যের বাইরে থেকে কয়েক লক্ষ মতুয়া ভক্ত পাগল, গোঁসাইরা ঠাকুরবাড়িতে আসেন। এমনকি এই দিনে বাংলাদেশ থেকেও কয়েক হাজার ভক্ত মেলায় আসেন। ওই দিন কামনা সাগরে ডুব দিয়ে পুণ্যস্নান করেন। ভক্তদের বিশ্বাস এই কামনা সাগরে ডুব দিয়ে স্নান করলে তাঁদের মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এরপর তারা মন্দিরে পুজো দেন। কিন্তু এবারে করোনা আতঙ্কে এই মেলা হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
অন্য দিকে রবিবার সকাল থেকে করোনার আতঙ্কে বারুনী মেলা বন্ধের দাবিতে ঠাকুরনগর রেল স্টেশনে মাইক বেঁধে প্রচার চলছে সচেতন নাগরিকবৃন্দের নামে। ঠাকুরনগরে বারুনী মেলা বন্ধের জন্য সাক্ষর সংগ্রহ করছেন তাঁরা। সচেতন নাগরিক বৃন্দের লিটন মৈত্র বলেন, যেখানে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার স্কুল, কলেজ, শপিংমল সহ বিভিন্ন সীমান্ত বন্ধ রাখতে বলেছেন সেইখানে বারুনী মেলা হলে করোনা সংক্রামণ ছড়াতে পারে। বারুণী মেলায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন ধরনের মানুষের জমায়েত হয়। দলবদ্ধভাবে কামনা সাগরে স্নান করে। সেখানে একজনের করোনাভাইরাস থাকলে অন্যের শরীরে সংক্রামণ ছড়াতে পারে। তাই এই বছর বারুনী মেলা বন্ধ রাখার দাবি জানাচ্ছেন তারা।
ঠাকুরবাড়ির সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর বলেন, সারা দেশে করোনা নিয়ে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে তাতে সরকারি কোনও নির্দেশিকা জারি হলে সেটা আমরা মান্যতা দেব। এই বিষয়ে আমারা মেলা করব কিনা সেটা নিয়ে দ্রুত মিটিং করে ঠিক করব। কারন আমাদের কাছে সব থেকে আগে ভক্তদের জীবন।
এ বিষয়ে বিজেপি সাংসদ ঠাকুরবাড়ির মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর বলেন, মতুয়া মেলা করার আমরা কেউ না। ভক্তরাই এই মেলা করেন। আমরা কাউকে ঠাকুরবাড়িতে আসতে বারন করতে পারি না। যারা মনে করবেন মেলায় আসবেন। আর যারা মনে করবেন ধর্মীয় মেলায় এলে করোনা ভাইরাসের ছড়াতে পারে তারা আসবেন না। আমরা ঠাকুরবাড়ি থেকে কোনও ভক্তকে মেলায় আসতে বাধা দিতে পারি না। তবে মেলা কেউ আটকাতে পাড়বে না।