তারাপীঠে পূণ্যার্থীদের প্রবেশ রুখতে পারল না প্রশাসন

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৮ আগস্ট: আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল কোশিকী অমাবস্যায় তারাপীঠে ঢুকতে পারবে না কোনও পুন্যার্থী। কিন্তু পুন্যার্থীদের প্রবেশ রুখতে ব্যর্থ প্রশাসন। ফলে সাংবাদিকদের মন্দির চত্বরে প্রবেশাধিকার না থাকলেও পুন্যার্থীরা দিব্যি মন্দিরের নিচে দাঁড়িয়ে পুজো থেকে অঞ্জলি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার ছিল কৌশিকী অমবস্যা। কথিত আছে মহিষাসুর বধের পর শুম্ভ-নিশুম্ভের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন স্বর্গের দেবতারা। শেষে দেবতারা মহামায়ার তপস্যা শুরু করেন। সেই তপস্যায় সন্তুষ্ট হয়ে দেবী নিজ কোষ থেকে উজ্জ্বল জ্যোতি বিচ্ছুরিত করে এক পরমাসুন্দরী দেবী মূর্তিতে আবির্ভূত হন। নিজ কোষ শরীর থেকে বের হওয়ার জন্য তিনি হলেন কৌশিকী। কৌশিকীদেবী আবার তারা ও কালীতে রূপান্তরিত হন।

আবার শোনা যায় কৌশিকী অমাবস্যার দিন তারাপীঠ মহাশ্মশানের শ্বেতশিমূল বৃক্ষের তলায় সাধক বামাক্ষ্যাপা সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন। ফলে ওই দিন মা তারার পুজো দিলে এবং দ্বারকা নদীতে স্নান করলে পুণ্যলাভ হয় এবং কুম্ভস্নান করা হয়। এই বিশ্বাসে আজও ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ এই দিনটিতে তারাপীঠে ছুটে আসেন। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে এবার কৌষিকী অমাবস্যায় পুন্যার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছিল। ঠিক হয়েছিল ১৭ আগস্ট থেকে ২০ আগস্ট কোনও পুন্যার্থী তারাপীঠে প্রবেশ করতে পারবে না।

তবে এদিন সকাল থেকে বেশ কিছু মানুষকে মন্দিরের নিচে পর্যন্ত দেখা গিয়েছে। সেখান থেকেই তারা পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছেন। বর্ধমানের বাসিন্দা অরূপ রতন ঘোষ বলেন, “তারা সোমবার তারাপীঠে এসেছেন। এই পূণ্যতিথিতে মায়ের পুজো দিলেন”। এরকম বহু মানুষ এদিন মন্দিরের নিচে দাঁড়িয়ে পুজো দেন। তবে এই দিনে যেখানে তারাপীঠে লক্ষ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়। সেখানে আজ ছিল শ্মশানের নিস্তব্ধতা। শুধুমাত্র মন্দিরের সেবাইতদের এদিন মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি ছিল।

মন্দির কমিটির সভাপতি তারাময় মুখোপাধ্যায়, সম্পাদক ধ্রুব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভক্তদের মোবাইলের মাধ্যমে মায়ের দর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকি যাঁরা ফোনে নাম লিখিয়েছেন তাদের নামে পুজোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *