সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২৯ অক্টোবর: প্রতিশ্রুতি সত্বেও ওবিসি তালিকায় স্হান না হওয়ায় ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে তিলি সম্প্রদায়ের মধ্যে। কোনও রকম রাখ ঢাক না করেই তৃণমূল নেতৃত্বের সামনেই সেই ক্ষোভ প্রকাশ হয় আজ তিলি সমাজের বিজয়া সম্মেলনে।
আজ ওন্দার ভেদুয়াশোলে বাঁকুড়া জেলা তিলি সমাজ সেবা প্রতিষ্ঠানের জেলা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ইস্তেহারে তৃণমূলের প্রতিশ্রুতি ছিল দল তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যে ক্ষমতায় এলে পশ্চিমবঙ্গের তিলি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সব রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু তৃণমূল বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও ইস্তেহারে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করেনি।
তৃতীয়বারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ক্ষমতায় বসে তিনি কি তার প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে গেলেন? এই প্রশ্নই উঠল বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে। ভেদু ওয়াশোল তপোবন আশ্রমের মনোরম পরিবেশে আয়োজিত এই সম্মেলনে ওবিসি প্রসঙ্গ উঠতেই তাল কাটে মঞ্চের উপরেই। অনেকেই প্রশ্ন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমরা সকলেই মানবিক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানি। আমাদের সম্প্রদায়ের অধিকাংশ নির্বাচক তৃণমূলকে ঢেলে ভোট দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের দাবি পূরনে সরকার এখনও নীরব কেন?
বাঁকুড়া জেলা তিলি সেবা প্রতিষ্ঠানের যুব সভাপতি হলেন গঙ্গাজলঘাটি ব্লক ২ এর সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি নিমাই মাজি। তিনি বলেন, আমরা মাস খানেক আগে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তিলি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকা ভুক্ত করার জন্য আবেদন পত্রের সঙ্গে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী যে কথা দেন তিনি সেই কথা রাখেন। আমরা জানি তিনি বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানিয়েছেন। দরকার হলে ফের আমরা রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে দরবার করব।
সংগঠনের সম্পাদক দীপঙ্কর শিট বলেন, আমাদের সম্প্রদায়ের প্রতিটি পরিবারে উচ্চ শিক্ষিত সদস্য থাকা সত্ত্বেও একটি পিছিয়ে পড়া জাতি। শিক্ষিত সদস্য সংখ্যা অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় বেশি থাকলেও কিন্তু অধিকাংশই বেকার। তিনি বলেন, তিলি সম্প্রদায় একমাত্র কৃষির উপর নির্ভরশীল।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দুর্গাদাস মন্ডল বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, তিলি সম্প্রদায়কে ওবিসি তালিকা ভুক্ত করতে হবে। রাজ্যের তিলিরা বাস্তবে কতটা অবহেলিত তা সংশ্লিষ্ট মহল অবগত হলেও আমাদের দাবি উপেক্ষিত। এদিন উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের জেলা সভাপতি গুইরাম ধুয়া সহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। আগামীদিনে এনিয়ে আন্দোলনে নামার ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন তারা।