উপাচার্য মনোনয়নে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান ক্ষুব্ধ উপাচার্যরা

আমাদের ভারত, ২ জুন: ১১ জন অধ্যাপককে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ক্ষুব্ধ একদল উপাচার্য ও সদ্য মেয়াদ শেষ হওয়া উপাচার্যরা শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপের আবেদন করেছেন তাঁরা।

অধ্যাপক ডঃ ওম প্রকাশ মিশ্র, অধ্যাপক ডঃ
দেব নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অধ্যাপক ডঃ আশুতোষ ঘোষ অধ্যাপক ডঃ রঞ্জন চক্রবর্তী প্রমুখ উপাচার্য মনোনয়ন নিয়ে এ দিন তাঁদের ক্ষোভের কথা জানান। কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের বলেন, “সম্প্রতি নেতাজী সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ‘মাকাউট‘ ও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি যেভাবে আচার্য-রাজ্যপাল উপাচার্য মনোনীত করেছেন, তা অগণতান্ত্রিক। রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের ওই ব্যাপারে প্রতিবাদ জানানো উচিত ছিল। কিন্তু জানায়নি। আশার কথা, বৃহস্পতিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী প্রকাশ্যে টুইটারের মাধ্যমে রাজ্যপালের মনোনয়ন নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।”

ওমপ্রকাশবাবু বলেন, “আমরা আচার্যকে সম্মান করি। আশা করব তিনি আইননিষ্ঠ হবেন। কিন্তু তা না করে আইন ভাঙছেন। বিভাজন তৈরি করছেন উপাচার্য ও অধ্যাপকদের মধ্যে। উনি সরাসরি রাজভবনে রিপোর্ট পাঠানোর কথা বলছেন। কিন্তু ২০১৯-এর সংশ্লিষ্ট রুলস অনুযায়ী উপাচার্যরা তা করতে পারেন না। আচার্যকে ফাইল পাঠালে তা বিকাশ ভবনের (উচ্চশিক্ষা দফতর) মাধ্যমে পাঠাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য একতরফাভাবে উনি ঠিক করতে পারেন না।”

ওমপ্রকাশবাবু বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করছি। প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গে আমরা দেখা করব।” এদিন সদ্য মেয়াদ শেষ হওয়া উপাচার্য আরও যাঁরা হাজির ছিলেন, তাঁরা হলেন অধ্যাপক ডঃ মানস কুমার সান্যাল, অধ্যাপক ডঃ নিমাই সাহা, অধ্যাপক ডঃ দীপক কর, অধ্যাপক ডঃ অনুরাধা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করে রাজভবনের টুইট সামনে আসার পরই এই নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। টুইটে ব্রাত্য বসু লেখেন, ‘সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারলাম, সরকার পোষিত ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ আবার রাজ্যপাল নতুন উপাচার্য নিয়োগ করেছেন। শিক্ষা দফতরের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করে এই নিযুক্তি করা হয়েছে। যা বর্তমানে উপাচার্য নিয়োগের যে নিয়ম রয়েছে, তার সম্পূর্ণ পরিপন্থী এবং বেআইনি।’
ব্রাত্যবাবু লেখেন, ‘অভূতপূর্ব পরিস্থতিতে আমরা বিভাগীয় আইনি পরামর্শ নিচ্ছি। ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ করা যায়, সেই বিষয়ও দেখা হচ্ছে। বেআইনিভাবে নবনিযুক্ত মাননীয় উপাচার্যদের সকলকে উচ্চশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে সসম্মান অনুরোধ থাকবে, তাঁরা যেন এই নিয়োগ প্রত্যাখ্যান করেন।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *