ভিক্ষুকের কপালেও নেই আবাস যোজনা! ছেঁড়া ত্রিপলে ঘেরা ছাগল থাকবার ঘরে অর্ধাহার ও অনাহারে দিন কাটছে এক অসহায় বৃদ্ধর

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১ ফেব্রুয়ারি: ভিক্ষুকের কপালেও জোটেনি আবাস যোজনা। ছেঁড়া ত্রিপলের ছাউনি দেওয়া ছাগল থাকবার ঘরে অর্ধাহার ও অনাহারে দিন কাটছে এক অসহায় বৃদ্ধর। বৃদ্ধ ভাতা তো দূরের কথা ফিরেও তাকায়নি স্থানীয় পঞ্চায়েত, অভিযোগ গ্রামবাসীদের। শুনতে কিছুটা অবাক মনে হলেও এমনই এক অসহায়তার মধ্যে দিয়ে দিন কাটছে ষাটোর্দ্ধ এক বৃদ্ধর। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি তপন ব্লকের গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর এলাকার।

জানা গেছে, গোফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নিতাই মালপাহাড়ি। এক সময় দক্ষতার সাথে শ্রমিকের কাজ করে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে সংসার যাপন করেছেন। কিন্তু হঠাৎই তার জীবনে নেমে আসে এক ঘোর অন্ধকার। অসুস্থতার কারণে দুই ছেলে মেয়েকেই হারান বৃদ্ধ। মারা যায় তার স্ত্রীও। আর এরপরেই বয়স বাড়ার সাথে সাথে বৃদ্ধ নিতাই হারিয়ে ফেলেন নিজের কর্মক্ষমতাও। পরিবারে আর তেমন কেউ না থাকায় নিতাইয়ের জীবনে আজ নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্ধাহার ও অনাহার। বাড়ির ভিটেতে রয়েছে ছেঁড়া ত্রিপল ও খড়ের বেড়া দেওয়া একখানা ছোট্ট ঘর। যা দেখলে যেন অনেকেই অবাক হবেন। ছোট্ট একখানা ঘরে যেখানে ছাগলকে রাখাও দুস্কর, সেখানেই দিনের পর দিন, মাসের পর মাস কাটিয়ে চলেছেন হতদরিদ্র ওই অসহায় বৃদ্ধ। সরকারি সাহায্য তো দূরের কথা আজ অবধি মেলেনি একটি আস্ত ত্রিপলও। খাবারের কথা জিজ্ঞেস করতেই বৃদ্ধর দু’চোখ বেয়ে অঝরে ঝড়লো জল। বললেন ভিক্ষে করতে পারলে জোটে খাবার, না পারলে অনাহারেই থাকতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে ষাটোর্দ্ধ বৃদ্ধর এমন করুন অবস্থা চললেও আজো কেন নজর পড়েনি স্থানীয় পঞ্চায়েতের তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

বৃদ্ধ নিতাই মাল পাহাড়ি বলেন, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে সকলকেই এক এক করে হারিয়েছেন। তার সাথে হারিয়ে গেছে ভোটার কার্ড ও আধার কার্ডও। কেউ কোনো সাহায্য তাকে করেননি। ভিক্ষে করতে পারলে খেতে পান, তাছাড়া অনাহারেই থাকতে হয়।

স্থানীয় এক বাসিন্দা রিয়াজুদ্দিন মন্ডল বলেন, অনেকদিন ধরেই ওই বৃদ্ধ ওইরকম একটি ছোট্ট ঘরের মধ্যে চরম অসহায়তার মধ্যে দিয়ে দিনযাপন করছেন। কারো দয়া হলে খাবার দেন, তাছাড়া না খেয়েই থাকেন তিনি। পঞ্চায়েত বা কেউই তাকে কোনো সাহায্য করেনি আজো। বিষয়টি প্রশাসনের লোকজনের গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here