রামনগরে বিজেপির যোগদান মেলায় অন্য দল ছেড়ে যোগদানের ঢল

আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর ২১ নভেম্বর: গতকাল নন্দীগ্রাম ১ ও ২ নং ব্লকের ১৭ টি পঞ্চায়েতের নেতৃত্বে বিজেপিতে যোগ দিয়েছে বেশকিছু মানুষ। শনিবার ফের রামনগর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির যোগদান মেলায় কয়েক হাজার কর্মী-সমর্থক নেতৃত্ব অন্যান্য দল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় বিজেপির ক্রমাগত শক্তি বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত রাজ্যের শাসকদল বলে অভিমত বিজেপি নেতৃত্বের।
রামনগরের এই যোগদান মেলায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, সাংসদ ও রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক লকেট চ্যাটার্জি, বিধায়ক ও রাজ্য বিজেপি সম্পাদক সব্যসাচী দত্ত, কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী সহ একাধিক জেলা নেতৃত্ব।

এদিন বহু মানুষের সমাগমে যোগদানের মাধ্যমে তৃণমূল নেতৃত্বের অধিকারী গড়ে বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি হল। একদিকে শুভেন্দু অধিকারী তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় চাপে তৃণমূল, তার ওপর পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জুড়ে প্রতিদিন বিজেপিতে যোগ দেওয়ার হিড়িক জোর কদমে চলছে। সেই কারনেই এদিন কাঁথির রামনগরে কয়েক হাজার মানুষ বিজেপিতে যোগদান করে বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

রামনগরের সভায় কৈলাশ বিজয়বর্গীয় পশ্চিমবঙ্গের সরকারকে চালচোর সরকার বলে সম্বোধন করেন। তিনি বলেন, আজকের রামনগরে বিজেপির সভায় উপস্থিত মানুষের আওয়াজ নবান্নের ইঁট নড়িয়ে দেবে। রামনগরের মানুষের আওয়াজ পশ্চিমবঙ্গের চালচোরদের সরকারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেবে। আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলায় এসে গরিবদের চাল দিচ্ছেন। ঝড় এলে নজর রাখেন। মমতা ব্যানার্জিকে সঙ্গে নিয়ে হেলিকপ্টার করে ঘুরে দেখে এক হাজার কোটি টাকা দিয়ে গেলেন। কিন্তু সেই টাকা কোথায় গেল কেউ জানে না। কৈলাস বিজয়বর্গীয় বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জিকে মানুষ চেয়েছিল। ভেবেছিল পরিবর্তন করে নতুন বাংলা গড়বে। কিন্তু দেশের মধ্যে যদি সর্বাধিক মহিলা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে, তাঁদের সম্মান নষ্ট হয়, তবে পশ্চিমবঙ্গে এমন সরকার রাখার প্রয়োজন নেই। যে রাজ্যে মহিলা মুখ্যমন্ত্রী থেকেও যেখানে মা বোন, মেয়ের সম্মান রক্ষা হয় না, সেখানে এমন সরকার রাখার প্রয়োজন নেই। এই মাটিতে যদি বাংলাদেশের আতঙ্কবাদিরা ঢুকে থাকে, সেখানে বাংলা সুরক্ষিত কোথায়? মা, মাটি সুরক্ষিত নয়।

মমতা ব্যানার্জি বলছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী বহিরাগত, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বহিরাগত, কিন্তু রোহিঙ্গা আতঙ্কবাদিদের আপনজন ভেবে কোলাকুলি করছেন। যাঁরা অস্ত্র পাচার করছে, ওরা আপনজন।
আজ টিএমসি’কে পিকে কোম্পানির কাছে বিক্রি করে রেখেছেন, টিএমসিতে মুকুল রায় নেই, টিএমসিতে শুভেন্দু অধিকারীও নেই, সেও আপনাকে টা টা করছেন। কোনো ভালো লোক টিএমসিতে থাকতে পারে না। দিদি আর ভাইপোর হাতে আর চার মাস সময় রয়েছে যতপারেন এই সময় টাকা গুছিয়ে নিন। কিন্তু ওই টাকা কি করবেন, যখন সিবিআই হস্তক্ষেপ করবে, তখন ওই পয়সা কোনো কাজে লাগবে না। জেলে বসে পয়সা গুনতে পারবেন না। রামনগরের সভা থেকে মমতা ব্যানার্জিকে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন কৈলাশ বিজয়বর্গীয়।

পাশাপাশি লকেট চ্যাটার্জি বলেন, যে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম মমতা ব্যানার্জিকে নবান্নের চেয়ারে বসিয়েছিল, সেই সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম বর্তমান মুখ্যমন্ত্রীকে সিংহাসন থেকে নামিয়ে বিজেপির সরকার গড়ে দেবে। বাংলায় চপ ও বোমা শিল্প ছাড়া আর কিছুই হচ্ছে না। হস্তশিল্প হিসেবে বোমা বাঁধা হস্তশিল্প চলছে। কাঁথিতে পান চাষি, মাছ চাষি, ধান চাষিরা রয়েছে, সেখানে তাঁরা যাতে সাবলম্বি হতে পারে, সেই ধরনের আইন তৈরি করেছেন মোদীজি। কিন্তু মমতা ব্যানার্জি বাংলাকে পাকিস্তান বানিয়ে তুলেছে বলে কটাক্ষ করেন সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি। আজকের এই রামনগরের সভা ঘিরে বিজেপি কর্মীদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here