‘অন্নে অনন্যা বাংলা’ অনুষ্ঠানে রেশন ডিলারদের জন্য একাধিক সুবিধা ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

রাজেন রায়, কলকাতা, ১ ফেব্রুয়ারি: ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বিধানসভা ভোটের আগে রেশন ডিলারদের জন্য আরও একটু বেশি সুবিধা ঘোষণা করলেন তিনি। সোমবার অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের রাজ্য সম্মেলনের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অন্নে অনন্যা বাংলা।’‌ অনুষ্ঠানে রেশন দোকানের লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ, রেশন ডিলার কমিশনের বরাদ্দ বৃদ্ধি সহ আরও বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধার কথা ঘোষণা করেন।

সাধারণত রেশন ডিলারদের লাইসেন্স প্রত্যেক বছর পুনর্নবীকরণ করতে হয়, কিন্তু চলতি বছরে রেশন
ডিলারদের চাপ অত্যন্ত বেশি। তাই ডিলারদের সুবিধার্থে তা এবার থেকে প্রতি তিন বছর অন্তর করার কথা এদিন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে বিষয়টি দেখে নিতে বলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‌এক বছর দেখতে দেখতে কেটে যায়। এটা এক বছরের জায়গায় তিন বছর করে দিতে হবে। ওদের সুবিধা হবে।’‌ পাশাপাশি নতুন ডিলারশিপ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে কার্যনির্বাহী মূলধন ৫ লক্ষ টাকা থেকে কমিয়ে ২ লক্ষ টাকা করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। করোনা পরবর্তী সময়ে সকলের হাতেই অর্থের যোগান কমেছে। তাই নতুন লাইসেন্সের আবেদনের জন্য কার্যনির্বাহী মূলধনের পরিমাণ কমিয়ে দিলেন তিনি। তিনি আরও জানান, ‘‌কাজ করতে করতে কোনও রেশন ডিলার যদি দুর্ঘটনা বা অন্য কোনও ঘটনায় মারা যান, তা হলে তাঁর পরিবার এককালীন ২ লক্ষ টাকা পাবে।’‌

বাড়ানো হয়েছে রেশন ডিলার কমিশনের বরাদ্দের পরিমাণও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন জানান, ‘২০১৯ সালে ডিলারদের কমিশন ছিল ৫৪ টাকা প্রতি কুইন্টাল। এখন তা বাড়িয়ে ৭০ টাকা প্রতি কুইন্টাল করা হয়েছে। এর ৮০ ভাগ টাকা অগ্রিম দেওয়া হচ্ছে। কমিশন দেওয়ার পদ্ধতির সরলীকরণ করা হয়েছে।’‌ মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‌রেশন ডিলারের আকস্মিক মৃত্যু হলে তাঁর ছেলেমেয়ে ছাড়াও বিধবা স্ত্রী, বিবাহিত কন্যা, বিবাহ বিচ্ছিন্না কন্যা এবং বিধবা কন্যাকে দোকান চালানোর লাইসেন্স দেওয়া হচ্ছে।’‌ পাশাপাশি তিনি জানান, রেশন ডিলারদের জন্য প্রায় ১২০০ শূন্যপদ ঘোষণা করা হয়েছে এবং বাছাই প্রক্রিয়া চলছে।

এদিন কৃষক, খাদ্য দফতরের কর্মী, রেশন ডিলারদের ‘‌কোভিড যোদ্ধা’‌ হিসেবে সম্মানিত করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘করোনার ওই সময়ে ‌তাঁরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে গিয়েছে।’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ,‘‌তা সত্ত্বেও একটা–দুটো রেশন দোকানে একটু–আধটু গন্ডগোল হয়েছে আর তাই নিয়ে টিভি চ্যানেলগুলো এমন করেছে যেন লক্ষ লক্ষ রেশন দোকানে গন্ডগোল হয়েছে। অনেকে মিথ্যা কথা রটিয়ে দেয়। রেশন দোকানে গিয়ে হামলাও করেছে। এমন ঘটনাও আমাদের কানে এসেছে।’‌ ‌রেশন ডিলার ও খাদ্য দফতরের আধিকারিকদের মুখ্যমন্ত্রী পরামর্শ দেন, ‘‌যেখানে রেশন বিলির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যাচ্ছে, সেখানে চলমান রেশন দোকান চালু করতে হবে। ই–রেশন চালু হয়ে গিয়েছে। লক্ষ্য রাখতে হবে, অনেকে রেশন নেয় না। যে রেশন নিচ্ছে না তার রেশন এন্ট্রি হয়ে যাচ্ছে, সেই চাল কেউ বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। এটা যেন না হয়।’‌

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *