চালু হওয়ার আগেই ভেঙ্গে পড়ছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প! মহকুমাশাসককে নিয়ে আত্রেয়ী রিভার ড্যাম পরিদর্শনে জেলাশাসক

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ২০ মে: চালু না হতেই ভেঙ্গে পড়ছে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেতেই বালুরঘাটে আত্রেয়ীর রিভার ড্যাম খতিয়ে দেখতে এলাকায় গেলেন জেলাশাসক। মহকুমাশাসককে নিয়ে ঘুরে দেখলেন এলাকা। শনিবার দুপুরে বালুরঘাটের আত্রেয়ী নদী বক্ষে তৈরি হওয়া নবনির্মিত রিভার ড্যাম ঘুরে দেখেন জেলাশাসক। কথা বলেন সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের সাথেও।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে বয়ে আসা আত্রেয়ী নদীতে জলের সমস্যার কারণে চরম দুর্দশায় পড়েন এপারের কৃষকরা। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে আত্রেয়ীতে জলস্ফীতি থাকলেও খরার সময়েই মূলত সমস্যায় পড়েন ভারতীয় কৃষকরা। যার কারণ হিসাবে উঠে আসে বাংলাদেশের রাবার ড্যাম নির্মাণ। দক্ষিণ দিনাজপুরের সীমান্ত এলাকার কৃষকদের দীর্ঘদিনের সমস্যা উপলব্ধি করে বর্ষার অতিরিক্ত জল ধরে রাখতে বালুরঘাটে আত্রেয়ীর উপর ড্যাম নির্মানের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার। যা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্পগুলির মধ্যে একটি অন্যতম প্রকল্প।

শহরের চকভবানী এলাকা থেকে ডাকরা পর্যন্ত আত্রেয়ীর বুক চিরে দীর্ঘ বেশকিছুদিন ধরে যার নির্মাণ কার্য শুরু হয়েছে। দিনরাত এক করে তড়িত গতিতে চলছে সেই ড্যাম নির্মানের কাজ। যেখানেই উঠে এসেছিল কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থার নিম্নমানের কাজের অভিযোগ। ড্যামের নির্মান কার্য সম্পূর্ণ না হতেই একপাশ খুলে দিয়ে চলছিল আত্রেয়ীর জল বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়া। যে জলের গতিতেই ইতিমধ্যে ড্যামের বেশকিছু অংশ ভেঙ্গে তলিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তোলে স্থানীয় বাসিন্দারা। ফাটল ধরে রয়েছে আরো বেশকিছু অংশেও। যা নিয়েই রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি হয়েছে ডাকরা এলাকায়।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অত্যন্ত নিম্নমানের কাজের জন্য ভেঙ্গে বসে গিয়েছে ড্যাম। বড় বড় ফাটলের জেরে পাড় ভেঙ্গে যাবার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে এলাকায়। যা প্রকাশ্যে আসতেই বাঁধের বড় বড় পাথর তুলে নিয়ে গিয়ে ধামাচাপা দেবার চেষ্টাও করছে কাজে নিযুক্ত ঠিকাদার সংস্থা বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। আর যার জেরে ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে এলাকার বেশকিছু পরিবার। যে ঘটনা জানিয়ে সেচ দপ্তরকে একটি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর এরপরেই বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেন খোদ জেলাশাসক। মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প নিয়ে এমন অভিযোগ সামনে আসতেই মহকুমাশাসক সুমন দাশগুপ্তকে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় সশরীরে হাজির হন জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা। ঘুরে দেখেন বিস্তৃর্ণ এলাকা, কথা বলেন সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের সাথেও।

জেলাশাসক বিজিন কৃষ্ণা বলেন, নির্মিত রিভার ড্যামের বেশকিছু অংশ ভাঙ্গনের যে অভিযোগ গ্রামবাসীরা তুলেছেন তা নিয়ে কথা বলা হয়েছে সেচ দপ্তরের সাথে। বিষয়টি নিয়ে সেচ দপ্তরের তরফেও নজর রাখা হয়েছে। কোন কোন এলাকা ভেঙ্গে যাচ্ছে বা বসে যাচ্ছে তা চিহ্নিত করে কাজের তদারকি করছেন তারাও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *