পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায় নিশ্চিত, বিজেপি আসছে, বললেন জেপি নাড্ডা

আমাদের ভারত, কাটোয়া, ৯ জানুয়ারি: জয় মা দুর্গা জয় মাকালী, শেষ কর এই অত্যাচার–কাটোয়া জনসভা থেকে এই আওয়াজ তুললেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। আজ ভারত মাতা কি জয় বলে কাটোয়ার কৃষক সুরক্ষা অভিযান কর্মসূচির সূচনা করলেন জেপি নাড্ডা। জনসভায় মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা দেখে বলেন, পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পরিবর্তনের জন্য একেবারে মনস্থির করে ফেলেছে।

বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি আজ অন্ডাল বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে করে কাটোয়ার জগদানন্দপুরে এসে পৌঁছান। এরপর তিনি সেখানে রাধাগোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেন। পুজোদেওয়ার পর মুস্থুলীতে জনসভায় বক্তব্য রাখেন। জানসভার পর ৫ জন কৃষকের বাড়ি থেকে এক মুঠো করে শস্য সংগ্রহ করেন। এরপর মথুরা মণ্ডল নামে কৃষকের বাড়িতে মাটিতে বসে কলাপাতায় আহার করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন, দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহা এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়।

জনসভায় তৃণমূলকে কাটমানির দল, চাল চোর, ত্রিপল চোরের দল বলে বিদ্রুপ করেন নাড্ডা। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের সরকার মোদী সরকারের সব প্রকল্পের নামও চুরি করেছে বলে আক্রমণ করেন। তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের নাম পালটে দিয়ে আলাদা নামকরণ করে চালাচ্ছে। সরাসরি আক্রমণ করে বলেন, এখানে কয়লা চুরি, বালি চুরির সিন্ডিকেট চলছে। এখানকার সরকার একের পর এক দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। আজ তৃণমূল কংগ্রেসের মানে কাটমানি, তৃণমূল কংগ্রেসের মানে চাল চোর, তৃণমূল কংগ্রেসের মানে ত্রিপল চোর। এই চোরদের বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
চোরেদের বাঁচাতে আদালতে যাচ্ছে মমতা ব্যানার্জির সরকার। তিনি বাংলায় বলেন, মমতা দিদি এত ভয় কেন? ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার এই রাজ্যে আসছে।

সভায় মানুষের উপস্থিতি দেখে তিনি বলেন, আজকের এই সভা বলে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ পরিবর্তনের জন্য একেবারে মনস্থির করে ফেলেছে। আপনাদের এত উৎসাহ, এত খুশি এই বার্তা দিচ্ছে যে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের বিদায় নিশ্চিত, বিজেপি আসছে।

কৃষক সুরক্ষা অভিযান কর্মসূচির সূচনা করে বলেন, এই অভিযান চলবে দেশের ৪০ হাজার গ্রামে। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বিজেপি কর্মকর্তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে একমুঠো চাল দান হিসেবে নেবেন ও নয়া কৃষি আইন সম্পর্কে বুঝিয়ে জনমত গঠন করবেন। এরপর ২৪-৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কৃষক ভোজ অভিযান চলবে। এই অভিযানে কৃষকদের সাথে বসে বিজেপি নেতারা খাবেন, কৃষি আইনের সুবিধা সম্পর্কে বুঝিয়ে বলবেন। কৃষকদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রতিবাদে কৃষকদের সংগঠিত করবেন। তিনি বলেন, বাংলায় জলের অভাব নেই তবুও এখানে চাষ হয় না। কৃষিক্ষেত্রে ২৪ নম্বর স্থানে আছে পশ্চিমবঙ্গ।

এ রাজ্যের কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি যোজনার সুযোগ না পাওয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন বিজেপি সভাপতি। তিনি বলেন, এতদিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি যোজনা রাজ্যে চালু করার জন্য চিঠি লিখেছেন। এতদিন তাঁর জন্য রাজ্যের ৭০ লক্ষ পরিবার এই প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তিনি বলেন, এতদিন পরে চিঠি দিয়ে আর লাভ নেই। এই সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে গেছে তাই কৃষকদের কথা মনে পড়েছে। এবার রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এসেই এই প্রকল্প চালু করবে।

আজ অন্ডাল বিমানবন্দরে নেমে সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তিনি কাটোয়া পৌঁছন। সেখানে গিয়ে সবার আগে রাধা গোবিন্দ মন্দিরে পুজো দেন। এরপর মুস্থুলীতে সভা করেন। আজ বিকেলে বর্ধমান শহরে তার রোড শো-এর কর্মসূচিও রয়েছে।

আপনাদের মতামত জানান

Please enter your comment!
Please enter your name here