মায়ের চিৎকারে ঘুম ভাঙল বনকর্মী এবং বনবস্তির বাসিন্দাদের, সফলভাবে উদ্ধার করে৷ সন্তানকে ফিরিয়ে দেওয়া হল মায়ের কাছে

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ২৪ মে: রবিবার কাকভোরে আর্ত চিৎকার মায়ের। আর তাতেই ঘুম ভাঙ্গল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগোয়া পানা ফরেস্ট ভিলেজের বাসিন্দাদের। তাদের কেউ কেউ ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসতেই বাসিন্দাদের নজরে পরে ফরেস্ট ভিলেজের বাসিন্দাদের জন্য বনদফতরের তৈরী সিমেন্টের পাকা জলাধারে হাবুডুবু খাচ্ছে একরত্তি হস্তি শাবক। আর সেই জলাধারের ধারে দাঁড়িয়ে অসহায়ভাবে নিজের শাবকের জন্য আর্ত চিৎকার করছে মা হাতিটি। এদিকে মা হাতির চিৎকারে ততক্ষনে বক্সার পানা রেঞ্জের আদমা বীটের বনকর্মীদেরও ঘুম ভেঙ্গে যায়। তারাও দ্রুত ছুটে আসেন জলাধারের কাছে। তারাও দেখতে পান মা হাতিটি কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে প্রাণপণে চিৎকার করছে আর একরত্তি হস্তি শাবক সেই জলাধারে খাবি খাচ্ছে।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন পশু চিকিৎসক সহ বনাধিকারিকদের একটি দল। শুরু হয় হস্তি শাবক উদ্ধারের কাজ। নিয়ে আসা হয় পাম্প সেট। ছেচে ফেলা হয় জলাধারের জল। ভেঙ্গে ফেলা হয় জলাধারের পাকা দেওয়াল। এরপর বনকর্মীরা দড়ি দিয়ে প্রায় ১ঘটার চেষ্টায় হস্তি শাবকটিকে জলাধার থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

জলাধার থেকে হস্তি শাবকটি সফলভাবে উদ্ধার করা গেলেও এবার বনকর্মীদের শুরু হয় পরবর্তী সংগ্রাম। কারন মানুষের সংস্পর্ষে আসা কোন হস্তি শাবককে মা হাতি খুব সহজে নিজের কাছে ফিরিয়ে নেয়না। এর আগেও এমনি বহু হস্তি শাবক উদ্ধারের পর তাদের আর ফিরিয়ে নেয়নি হাতির দল বা শাবকটি মা হাতিও।তাদের সকলকেই বনদফতরের হাতিশালায় রেখে বড় করে তুলেছেন বনদফতরের অভিজ্ঞ মাহুতদের দল।

এদিন উদ্ধারের পর শাবকটিকে জলাধারের থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মা হাতির কাছে ফিরিয়ে দেবার চেষ্টা শুরু হয়। তবে এবার বনকর্মীদের খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। মাত্র আধ ঘন্টার মধ্যেই মা হাতিটি নিজের শাবককে কাছে টেনে নিয়ে শুঁড় দুলিয়ে পানবাড়ির জঙ্গলে ফিরে যান। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেন বনাধিকারিক থেকে বনকর্মীরা।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেকটার বুদ্ধরাজ শেওয়া জানান,“খুব ভাল লাগছে। হস্তি শাবকটিকে সফলভাবে উদ্ধার করে মাত্র আধ ঘন্টার মধ্যেই তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া গেছে।্মা হাতিটিও শুঁড়ে পেঁচিয়ে তার শাবককে নিয়ে জঙ্গলে মিলিয়ে গেছে। এবারের ঘটনা ব্যাতিক্রম হয়ে থাকল আমাদের কাছে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *