করোনায় মৃতদের সৎকার বন্ধ ক্যানিংয়ে

আমাদের ভারত, ক্যানিং, ১২ মে: করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে তাঁদের খোলা জায়গায় দাহ করা হচ্ছিল। আর সেই কারণেই ক্যানিংয়ে তৈরি হওয়া বৈতরণীতে গত বছর জুলাইয়ের শেষ থেকে শুরু হয় করোনায় মৃতদের সৎকার। শুধু ক্যানিং মহকুমা নয়, বারুইপুর মহকুমা সহ দক্ষিণ কলকাতারও বেশ কিছু জায়গার মৃতদেহ এই ক্যানিংয়ের বৈদ্যুতিক চুল্লিতেই দাহ করা হচ্ছিল। কিন্তু গত রবিবার রাত থেকে চুল্লি খারাপ হয়ে যাওয়ার কারণে এখানে আপাতত বন্ধ সৎকার। ফলে সমস্যায় পড়েছেন অনেকেই। বিশেষ করে ক্যানিং কোভিড হাসপাতাল সহ আশপাশের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র– যেখান থেকে করোনায় মৃতদের পাঠানো হত এই শ্মশানে তারা সমস্যায় পড়েছেন। প্রতিদিন অনেক মৃতদেহ দাহের জন্য এলেও চুল্লি খারাপ থাকার কারণে দেহ ঘুরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আগে এই অঞ্চলে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলে ক্যানিং বৈতরনীতেই আনা হত সৎকারের জন্য। গত জুলাইয়ের শেষ থেকে ডিসেম্বরের শেষ পর্যন্ত মোট ৪৭ টি দেহ দাহ করা হয়েছিল এখানে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এখনো পর্যন্ত মাত্র চার মাসেই ২১৩ টি দেহ ইতিমধ্যেই দাহ হয়েছে। করোনা সংক্রমণের জেরে গত কয়েকদিনে মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। গত শনিবার পর্যন্ত প্রতিদিন গড়ে ১৮ থেকে ২০ টি দেহ সৎকারের জন্য আসছিল। তবে রবিবার চারটি দেহ দাহ করার পর চুল্লিতে সমস্যা দেখা দেয়। সেই থেকেই বন্ধ।

প্রশাসনের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই চুল্লি মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। আগামী দুদিনের মধ্যেই চুল্লি মেরামতি সম্পূর্ণ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন সরকারি আধিকারিকরা। ক্যানিং ১ ব্লকের বিডিও শুভঙ্কর দাস বলেন, “গত কয়েকমাস ধরে টানা চলার কারণে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে চুল্লিতে। ইতিমধ্যেই ইঞ্জিনিয়ার সারাইয়ের কাজ শুরু করেছেন। আশা করা যাচ্ছে দিন দুয়েকের মধ্যেই এটিকে সচল করা যাবে।”

প্রশাসন সূত্রের খবর, আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার করোনায় মৃতদের দেহ ক্যানিংয়ের এই বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করা হলেও বর্তমানে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বারুইপুরের কীর্তনখোলা বৈদ্যুতিক চুল্লি, রাজপুর বৈদ্যুতিক চুল্লিতে রাত বারোটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত শুধুমাত্র করোনায় মৃতদের দাহ করার কাজ শুরু হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *