রাজেন রায়, কলকাতা, ১৬ জুলাই: আচার্য তথা রাজ্যপালের ডাকে সাড়া না দিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেননি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্যেরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সোশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদমাধ্যমের সামনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে শিক্ষা মন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিষয়টি নিয়ে সরাসরি বিঁধলেন রাজ্যপালকে। তিনি বললেন, ‘রাজ্যপাল ‘রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি’ নিয়ে কথা বলছেন।’ রাজ্যপাল বলেছেন, রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ‘রাজনৈতিক খাঁচাবন্দি’। সেই সঙ্গে ‘বিদ্রোহী’ উপাচার্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তিনি। রাজ্যপালের বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে এ দিন পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ওনার দৃষ্টিভঙ্গির যথেষ্ট অভাব আছে। এটা সঠিক সময় নয়।’
এই মুহূর্তে গোটা দেশ তথা পশ্চিমবঙ্গ করোনার থাবায় আক্রান্ত। একদিকে রাজ্য সাধারণ মানুষের প্রাণ বাঁচাতে ব্যস্ত অন্যদিকে উপাচার্য দ্রুত রেজাল্ট বের করতে ব্যস্ত। স্বাভাবিকভাবেই খাতা দেখা থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভিন্ন কাজে এই সময় ব্যস্ত আছেন উপাচার্যরা। এমন সময় এই বৈঠকের আয়োজন করা উচিত হয়নি। সঠিক সময় উনি জানান উপাচার্যরা নিশ্চয়ই যোগ দেবেন।’
এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপাল’কে কটাক্ষ করে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় না রাজভবন কোনটা রাজনৈতিক আখড়া এটা মানুষ বলবে।
করোনা পরিস্থিতিতে পডুয়াদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে গতকাল বুধবার রাজ্যের ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপার্চাযদের বৈঠকে ডেকেছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই বৈঠকে এক জন উপাচার্য ছাড়া কেউই উপস্থিত হননি। আর তা নিয়ে রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আবহ তৈরি হয়েছে।
পাশাপাশি পার্থ আরও বলেন, ‘রাজ্যপাল সম্মানীয় ব্যক্তি। যা ভালো বুঝেছেন তাই করেছেন। আমাদের লক্ষ্য শিক্ষা ব্যবস্থা যাতে কোনভাবে ব্যাহত না হয়। উনি যদি উপদেশ দিতে চান, নিশ্চয়ই দেবেন। উনি শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে ও ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে উনি বলতেই পারেন। তার সঙ্গে কথা বলা হবে না এমনটা নয়। উনি যাদবপুর, বারাসাত সব জায়গায় গেছেন, কথা বলেছেন। বাংলার শিক্ষার উৎকর্ষতা যাতে আরো বৃদ্ধি পায় তার জন্য উনার মূল্যবান উপদেশ শুনবো। তবে আইন বিধি-বিধান মেনে তা করতে হবে। এতে কোনও বিরোধ নেই।’