
রাজেন রায়, কলকাতা, ২৯ জুলাই: করোনা সঙ্কটে লকডাউনে রাজ্যে কিছু ক্ষেত্রে অপরাধ কমলেও দিন এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে কিছু ক্ষেত্রে অপরাধ বেড়ে গিয়েছে। তাই এবার রাজ্যে তুলনামূলকভাবে বেড়ে যাওয়া বাল্যবিবাহ, নারী ও শিশু পাচার এবং যৌন হেনস্থার ঘটনায় তদন্তে গতি আনতে তিন সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এতে রয়েছেন রাজ্য পুলিশের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল (প্ল্যানিং) অজয় রানাডে, কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দময়ন্তী সেন এবং রাজ্য তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির ডেপুটি ইন্সপেক্টর ড. প্রণব কুমার। এই দল প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখে রিপোর্ট জমা দেবে আদালতে।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি এক জনস্বার্থ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন জানিয়েছিল করোনা, লকডাউন ও আমফান পরবর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১৩৬ জন নাবালিকার বিয়ে হয়েছে। এছাড়াও শিশু পাচার, শিশু শ্রম ও নারী নির্যাতনের হার ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে প্রত্যেক রাজ্যের হাইকোর্ট কে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই কলকাতা হাইকোর্টের দায়ের করা স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের পরামর্শ অনুযায়ী তিন সদস্যের সিট গঠনের নির্দেশ দেয়। যদিও এই বিষয়ে রাজ্যে যথেষ্ট উদ্যোগ নিচ্ছে এবং অনেককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল।
লকডাউনের মধ্যেই বেলঘড়িয়ার ধ্রুব আশ্রম থেকে ১৩ জন নাবালিকা নিখোঁজ হয়ে যায়। তাদের মধ্যে দুজনকে পাওয়া গেলেও বাকিদের খোঁজ পাওয়া যায়নি। উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার এক নিখোঁজ নাবালিকার ক্ষেত্রেও পুলিশ ৯ বছর ধরে তার কোনও হদিশ পায়নি। কোচবিহারের যে ৪০ জন নাবালিকাকে পুলিশ উদ্ধার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে, তাদের অবস্থান সম্পর্কেও আদালতকে কিছু জানানো হয়নি। এই সমাজ থেকে ছেড়ে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছে হাইকোর্ট। এছাড়াও কোচবিহারের পার্শ্ববর্তী জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, মালদা, কালিংপংয়ের মতো জেলাগুলিতে নারী পাচারের অবস্থান কি, তা নিয়েও রাজ্যকে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।