চার বছরের চুক্তিতে সেনায় নিয়োগের ভাবনা

আমাদের ভারত, ২৮ মে: সরকারের প্রায় সব ধরনের কাজেই চুক্তিতে নিয়োগ চালু হয়েছে। বাকি ছিল খালি সেনাবাহিনী। এবার সেখানেও চুক্তিতে নিয়োগের কথাবার্তা চলছে বেশ কয়েক বছর ধরে। সূত্রের খবর, শীঘ্রই চুক্তিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত বলবৎ হতে চলেছে প্রতিরক্ষা বাহিনীর তিন বিভাগেই।

নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, আর্মি, এয়ার ফোর্স, নেভিতে জওয়ান থেকে অফিসার সব পদেই প্রাথমিক নিয়োগ হবে চার বছরের জন্য। চার বছর পর ২৫% কে পাকাপাকিভাবে রেখে দেওয়া হবে। সেই ২৫% কে নতুন করে নিয়োগ করবে সেনা। অর্থাৎ তাদের পরের পাকা চাকরি সঙ্গে আগের চার বছর যোগ করা হবে না। চুক্তিতে লোক নিয়োগের সিদ্ধান্ত খুব অল্প দিনের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে বলে সূত্রে খবর।

প্রাথমিকভাবে ভাবা হয়েছিল চুক্তিতে চাকরির মেয়াদ হবে তিন বছর, কিন্তু নয়া প্রস্তাবে ঠিক হয়েছে চার বছরের চুক্তি শেষে ৭৫% কে বসিয়ে দেওয়া হবে। ২৫% কে রেখে দেওয়া হবে। সেনা মনে করে এই ৭৪ শতাংশের সরকারের অন্য কাজে বা বেসরকারি অফিসে চাকরি পেতে অসুবিধা হবে না। কারণ ৪ বছর সেনায় কাজ করার সুবাদে তারা অভিজ্ঞতায় অনেকটাই এগিয়ে যাবে।

করোনার কারণে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ অনেক দিনই বন্ধ ছিল। ফলে শূন্য পদের সংখ্যা এক লাখ পেরিয়ে গেছে। এত পদ অল্প দিনের ব্যবধানে পূরণ করতে নানা সমস্যা তৈরি হতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম কারণ আর্থিক চাপ। এত লোকের বেতন যোগানো সেনার বাজেটে বিরাট বোঝা পরতে পারে, সেই কারণেই চুক্তির ভিত্তিতে চার বছরের জন্য নিয়োগের ভাবনা। তবে স্থায়ী পদে নিয়োগ বন্ধ হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়, শূন্যপদের বড় অংশ পূরণ করতে এই চুক্তিতে নিয়োগের ভাবনা। এতে আর্থিক সাশ্রয় হবে বলেও মনে করছে সেনাবাহিনী।

আরোও একটি প্রস্তাব রয়েছে সেনার, যেটা আলোচনার স্তরে রয়েছে এখনো পর্যন্ত। ইঞ্জিনিয়ারিং কারিগরি ক্ষেত্রে নিয়োগে সেনা কর্মী এবং অফিসারের চাকরির শুরুতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। খরচ বাঁচাতে সেনা কারিগরি শিক্ষা কেন্দ্র এবং প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ লোক নিয়োগ করবে। এর ফলে প্রাথমিক প্রশিক্ষণ তাদের দিতে হবে না। এতে অর্থ সাশ্রয় হবে।

তবে এই চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ মেডিকেল কোরে এবং কিছু অত্যন্ত গোপনীয় কাজের জায়গায় বলবৎ হবে না। চুক্তিতে বহাল থাকা কালীন যুদ্ধে অথবা সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই যেতে হতে পারে। স্থায়ীপদে নিযুক্ত সেনারা যত ধরনের কাজ করে থাকেন সবই করতে হবে চুক্তিবদ্ধ জাওয়ান অফিসারদের। চুক্তি চাকরিতে স্থায়ীভাবে যুক্ত সেনা কর্মীদের সমান বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে এবং চুক্তি শেষে আবার চাকরি পেতে সাহায্য করবে সেনা।

সেনার কর্তাদের ধারণা দেশের কর্পোরেট কোম্পানিগুলি সেনায় চাকরি করা লোকজনকে নিজেদের সংস্থায় চাকরি দেবে, কারণ সেনায় যারা কর্মজীবন শুরু করা তারা অত্যন্ত শৃঙ্খলাপরায়ন হবে। সেনার মতে তারা সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রে উন্নত মানবসম্পদের জন্য নতুন ভূমিকা পালন করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *