সিভিক টিচার! সরকারি প্রাথমিক স্কুলে সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে পড়ানোর ভাবনায় সমালোচনার ঝড় তৃণমূলের বিরুদ্ধে

আমাদের ভারত, ১৬ মার্চ: বাঁকুড়া জেলা পুলিশের অঙ্কুর প্রকল্পে প্রাথমিকের ছাত্র-ছাত্রীদের অংক থেকে ইংরেজি পড়াবেন সিভিক ভলান্টিয়াররা। এই খবর সামনে আসতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজ্যজুড়ে। রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় অষ্টম শ্রেণি পাস ন্যূনতম যোগ্যতায় নিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ারদের প্রাথমিকে ক্লাস নেওয়ার খবর শুনে তুমুল সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। নিন্দায় মুখর হয়েছেন শিক্ষক পদে চাকরির অপেক্ষায় থাকা বছরের পর বছর আন্দোলন চালিয়ে আসা চাকরি প্রার্থীরাও।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতা থেকে জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, এই ঘটনার বিরোধিতায় পথে নেমেছে বিজেপি। দুপুরে সল্টলেকের করুণাময়ীতে ডিরোজিও ভবন ও বিদ্যাসাগর ভবনের বাইরেও বিক্ষোভ চলে। সংসদের বাইরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে ধিক্কার জানিয়ে নিয়োগ দুর্নীতি সহ অঙ্কুর প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিজেপি সাংসদরা।

বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এই উদ্যোগের তীব্র সমালোচনা করে শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, এটা আসলে সরকারি স্কুলগুলোকে বন্ধ করে দেওয়ার একটা পরিকল্পনা। তিনি টুইট করে বলেন,” দিনে দিনে কমছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা। এবছর ৪ লাখ পরীক্ষার্থী কমেছে। ৮২৭টি সরকারি স্কুল ধুঁকছে। পড়ুয়ার সংখ্যা ৩০-এর নিচে। প্রাথমিকের পড়ুয়াদের ক্লাস করানোর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে সিভিক ভলান্টিয়ারদের। সরকারি স্কুলগুলিকে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে রাজ্য সরকার।”

সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে প্রাথমিকের পড়ুয়াদের ক্লাস করানোর প্রস্তাবের সমালোচনা করেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডঃ সুভাষ সরকার। তিনি বলেন সিভিক ভলান্টিয়ার দিয়ে অংক ইংরেজি শেখানোর বিষয়টা শুনেছি, অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এমন অবস্থা হলে সরকার চালানোর দরকার নেই।

বিজেপির পাশাপাশি সিভিক পুলিশের প্রাথমিকের ক্লাস নেওয়ার বাঁকুড়া পুলিশের প্রকল্পের তীব্র সমালোচনা করেছে বামেরাও। বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রাম পাড়া জাগাও কর্মসূচিতে যোগদান করতে গিয়ে সিভিক পুলিশ ইস্যুতে সরব হন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, সিভিক পুলিশেই বাংলার উন্নয়ন হবে, এমনটাই মনে করছে বাংলার শাসক দল। যদি তাই হয়, সিভিক ভলান্টিয়ার যে স্কুলে পড়াছে সেই স্কুলের তৃণমূল নেতাদের ছেলেমেয়েদের ভর্তি করুক। নিজেদের তো টাকার অভাব নেই, এই রাজ্য থেকে, দিল্লি থেকে বিদেশ, লুটের পয়সায় নিজেরা চলবো, আর গরিব মানুষ সাধারণ মানুষের শিক্ষার দায়িত্ব নেব না।

সিভিক পুলিশদের দিয়ে পড়ানোর প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষক পদে আন্দোলনকারী চাকরি প্রার্থীরা। চাকরির দাবিতে রোদ জল বৃষ্টি অগ্রাহ্য করে আন্দোলন করতে আসা বেকার যুবক যুবতীরা দাবি করেছেন, শিক্ষকদের অভাবে যদি সত্যি ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর জন্য সিভিকদের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে আমাদের আগে নেওয়া হচ্ছে না কেন? আমরা তো ছোটদের পড়ানোর জন্য দু’বছর ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে ট্রেনিং নিয়েছি। সেখানে কিভাবে ছোট ছোট ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎগুলো এভাবে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *