
আমাদের ভারত, বর্ধমান, ২৯ জুলাই: বর্ধমান জেলা জুড়ে হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭৫ পেরিয়ে গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য সরকারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনও শহরে লকডাউন ঘোষণা করেছিল। এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েছে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারগুলো। লকডাউনের সময় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও তাদের হাতে রান্না করা খাবার তুলে দেওয়া হচ্ছিল। আনলক ফেজেও পরিস্থিতি সামাল দিতে আগস্ট মাসেও লকডাউনের জন্য নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ বুধবারও জেলাজুড়ে চলে লকডাউন।
সকাল থেকেই রাস্তাঘাট ছিল শুনশান। রাস্তায় সেভাবে মানুষজন ছিল না। ফলে এদিন ফের চিন্তায় পড়ে যায় রাস্তার এখানে ওখানে আশ্রয় নেওয়া ভবঘুরেদের পরিবারগুলি। তাদের কথা চিন্তা করে তাদের হাতে রান্না করা খাবার তুলে দিতে উদ্যোগ নেয় বর্ধমান রান্নার পাঠশালা নামে শহরের একটা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। এই সংস্থার তরফে বর্ধমান স্টেশন সংলগ্ন স্থানে প্রায় তিনশো জনের হাতে রান্না করা খাবার তুলে দেওয়ার দায়িত্ব নেয় পারমিতা গাঙ্গুলি পাল, জয়িতা সেন, দূর্বা পাটিকার সাহারা। এছাড়া সংস্থার পক্ষ থেকে খাবার প্যাকেটজাত করে শহরের বিভিন্ন অলিতেগলিতে ঘুরে ও অভুক্ত মানুষদের খুঁজে বের করে খাবার পৌঁছে দেওয়া দেন শুভম ঘোষ, তরুণ দাস, তন্ময় দাস, মলয় দত্ত বনিক, তথাগত পাল, সুমন্ত ঘোষেরা। শহরের অন্য অংশে খাবার পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল জিতু দাস, প্রিতম ঘোষ, সুমিতা দাস, অনন্যা চৌধুরী, সুবর্ণা শ্রীমানী সাহা সহ অন্যান্যদের উপর।
বর্ধমান রান্নার পাঠশালা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সভাপতি পারমিতা গাঙ্গুলি পাল বলেন, ‘লকডাউনের সময় থেকেই আমাদের সংগঠন টানা মানুষের কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে চলেছে। এদিন স্টেশন এলাকায় প্রায় তিনশো জনের হাতে খাবার তুলে দেওয়া হয়। এদিন আমাদের সদস্যরা বিভিন্ন ভাগে ভাগ হয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় খাবার পৌঁছে দেয়। এছাড়া লকডাউনের কারণে যে সব পরিবারের লোকজন কাজ হারিয়ে আজ সংসার চালাতে পারছেন না তাদের হাতেও রেশন সামগ্রী আমরা তুলে দিচ্ছি। এছাড়া বেশ কিছু পরিবারকে বেছে নিয়েও প্রতিদিন তাদের বাড়িতে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিয়ে আসছে আমাদের সংগঠনের সদস্যরা। আমাদের একটাই লক্ষ্য কোন মানুষ যেন অভুক্ত না থাকে। সেই খবর কানে এলেই সেখানে পৌঁছে যাবে বর্ধমান রান্নার পাঠশালার সদস্যরা।’