জামাইষষ্ঠী পালনে পিছিয়ে নেই শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা

কুমারেশ রায়, পশ্চিম মেদিনীপুর, ১৬ জুন:
জামাই বাবাজীবনের পাতে রুই মাছের একটা আস্ত মাথা, কিংবা যত দামি হোক না কেন ইলিশের চাকা, খাসি অথবা মুরগির মাংস কিংবা খাসি এবং মুরগি দুই সহ যত রকম ভাবে আপ্যায়ন করা যায়, তার জন্য মরিয়া শ্বশুরমশাই এবং শাশুড়িরা।
দুই হাজার কুড়ি সাল থেকে করোনা আবহে উৎসব অনুষ্ঠানে ভাটা পড়েছে। তার আগের বছর পর্যন্ত জামাইয়ের জন্য জ্যৈষ্ঠের গরমে বাজার করে শ্বশুর মশাইয়ের ঘর্মাক্ত পাঞ্জাবি কিংবা জামা শরীরের সাথে চিটিয়ে যেত।
গত বছর থেকেই এই চেনা দৃশ্যপটের পরিবর্তন হয়েছে।পরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ তাই জোড়ায় জোড়ায় দম্পতিদের জামাইষষ্ঠীর আগের দিন কিংবা জামাইষষ্ঠীর দিন সকালে দেখা যাচ্ছে না বা দেখা গেলেও কম দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু তাই বলে জামাইষষ্ঠীর উৎসাহ কিন্তু একই আছে। আজ থেকেই এক ঘন্টা বাজারের সময় বেড়েছে, মাত্র চার ঘণ্টার বাজারের মধ্যেই শ্বশুর মশাইরা কিংবা শ্যালকরা জামাইকে সন্তুষ্ট করার জন্য কেনাকাটা করেছেন।

ঘাটালে মাংস এবং মিষ্টির দোকানে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। বলা যেতে পারে করোনা বিধি উধাও, কিন্তু কি করা যাবে বলুন? আজ প্রায় দেড় বছর ধরে মানুষের জীবনযাত্রায় বিভিন্ন বিধিনিষেধ। মাঝে তিন-চার মাস স্বাভাবিক ছিল কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলির কৃপায় র‍্যালি এবং জনসভার পর এখন আবার কার্যত লকডাউন চলছে। বছরে একটি দিন জামাইষষ্ঠী কি আটকে থাকবে?

আধুনিক শাশুড়ি জামাইয়ের কপালে ভার্চুয়ালি ফোঁটা দিচ্ছেন, কিন্তু যারা এপাড়া ওপাড়া বিয়ে করেছেন কিংবা যাদের গাড়ি আছে কিংবা বাইক, তারা শ্বশুরবাড়ি এসেছেন।
তাদের আপ্যায়নের ত্রুটি রাখছে না শ্বশুরবাড়ি। বিভিন্ন মিষ্টির পসরা সাজিয়ে প্রস্তুত মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে দেদার বিক্রি হচ্ছে মিষ্টি। পিছিয়ে নেই ফল ব্যবসায়ীরাও, ফল বিক্রি হয়েছে প্রচুর। কারণ জামাইকে কিছু ফল না খাওয়ালে পরিপূর্ণতা আসে না।

আগের দিন থেকেই মিষ্টি , মাংস, মাছ, সবজি ভালোই বিক্রি হয়েছে এবং বুধবারেও হয়েছে।
যথেষ্ট উৎসাহের সাথে কেনাকাটা চলছে। কাপড়ের দোকানগুলোতেও ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে, তাই বলা যেতে পারে জামাইষষ্ঠী পালনে পিছিয়ে নেই শ্বশুর বাড়ির সদস্যরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *