শান্তিপুরের যৌনপল্লীতে চাঞ্চল্য, তিন দিনের শিশুকে তালাবন্ধ করে পালিয়ে গেল মা

স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদিয়া, ৩ জুলাই: তিন দিনের ছোট্ট এক রত্তি ফুটফুটে দুধের শিশু গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেঁদে চলেছে। ঘর থেকে ভেসে আসছে জোরে চালানো ফ্যানের আওয়াজ।পাশাপাশি ঘরে নানান কোলাহলে শিশুর কান্নার আওয়াজ খেয়াল করেননি কেউ। ঘরের দরজা বাইরে থেকে তালা বন্ধ। ১০ ঘন্টা ধরে শিশুটি চিৎকার করে গেছে। চরম অমানবিক, নির্মম ঘটনাটি ঘটেছে শান্তিপুরের যৌনপল্লীতে।

জানাগেছে, উত্তর ২৪ পরগনার নাজমা খাতুন, যৌনপল্লীর যৌনকর্মী। এলাকা সূত্রে জানা যায়, অতীতেও তার দুটি ছেলেকে, নাবালক অবস্থায় বোম্বে দিল্লিতে কাজে পাঠিয়েছেন রোজগারের উদ্দেশ্যে। বাকি দুজনকেও অর্থের বিনিময়ে নিঃসন্তান দম্পতিদের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। বিক্রির বিষয়টি উহ্য থাকলেও আইন অনুযায়ী কোর্টের মাধ্যমে লিখিত করেছিলেন অপর দুই নাবালকের ক্ষেত্রে। এবারে পঞ্চম হিসাবে সদ্যজাত তিনদিনের শিশু কন্যাকে ঘরে রেখে, তালা বন্ধ অবস্থায় রেখে পালিয়ে গেছে। যাওয়ার কারণ হিসাবে কন্যা সন্তান জন্মানোর কারণ দেখছেন প্রতিবেশীরা।

সন্তান জন্ম নেওয়ার একদিন আগে পর্যন্ত পেশা অনুযায়ী যৌনকর্ম চালিয়ে গেছেন বলে অভিমত অন্যান্য যৌনকর্মীদের।
প্রতিবেশী যৌনকর্মীরাই নবজাতককে উদ্ধার করে, শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান মেডিকেল চেকআপের জন্য। এরপর ওই শিশুর মার সাথে যোগাযোগ করা হলে, প্রাথমিক ভাবে আসার কথা জানালেও পরবর্তীকালে মোবাইলের সুইচ অফ করে দেন।

যৌনকর্মীরা শান্তিপুর থানার শরনাপন্ন হন। এরপর নদিয়া জেলা চাইল্ড লাইন রাত দুটো নাগাদ উদ্ধার করে নিয়ে যায় ঐ শিশুটিকে। চাইল্ড লাইনের প্রতিনিধি জানান, রানাঘাটে রেখে প্রতিপালন করা হবে ঐ শিশুকে। শিশুর মায়ের সাথে পুনরায় যোগাযোগের চেষ্টা করা হবে।

এ ধরনের খবর পরিবেশন করতে গিয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা অনুযায়ী আমরা জানতে পেরেছি, বহু নিসন্তান দম্পতি প্রতিপালন করতে চেয়ে আগ্রহী হয়ে থাকেন। পূর্বে এ বিষয়ে আমরা একটি সংবাদ পরিবেশন করেছিলাম, আইন মোতাবেক কি ভাবে শিশু দত্তক নিতে পারেন। তবে খুব জটিল বিষয় নয়। আগ্রহীরা নদীয়া জেলা সমাজ কল্যান দপ্তর এবং চাইল্ড লাইনের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *